মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের নিন্দা-প্রতিবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদেরের বিবৃতি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই বিএনপির দলীয় চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এ বিবৃতি দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বৈরশাসনের গর্ভে জন্ম নেয়া বিএনপি বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক পন্থাকে নস্যাৎ করতে দীর্ঘদিন যাবৎ গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, এই চক্রান্তের অংশ হিসেবেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না। করলেও পরাজয়ের ভয়ে প্রচার-প্রচারণা করে না। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিষোদগার করাসহ গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি বিরোধী আচার-আচরণ করে আসছে। বুধবার অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর বিএনপির সেই চিরাচরিত রূপ পুনরায় প্রতিফলিত হয়েছে। কুমিল্লা সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতৃাদের চিরায়ত কাল্পনিক নাটকীয় মন্তব্য দেশবাসীকে হতাশ করেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা যেমন গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, ঠিক তেমনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। তারা একই সঙ্গে দলীয়ভাবে নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু তাদের দলের অনেক প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, অংশগ্রহণকারী কিছু প্রার্থীকে তারা দল থেকে বহিষ্কার করে। আবার নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে দূরভিসন্ধিমূলক মন্তব্য করে।

তিনি বলেন, একদিকে নির্বাচনে তারা দলীয় প্রার্থী দেবে না, প্রকাশ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না; অন্যদিকে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারায় লিপ্ত হবে। আর তাদের রাজনৈতিক দৈন্যতার দায় দেশের জনগণ, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপিয়ে দেবে।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় সরকার পর্যায়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। নির্বাচন কমিশন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিলেও মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপি নেতারা এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অবাস্তব, কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিরূপ মন্তব্য করেছে।

‘বহুমাত্রিকতা বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শ’ মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন দাবির জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বহুমাত্রিকতা’ বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। আমরা বিএনপিকে দেখি বিভিন্ন সময় নানা ছদ্মবেশে বহুরূপী হিসেবে পথ চলতে যাদের সুনির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ নেই। বিএনপি কখনই বহুত্বের সমন্বয়ে বিশ্বাসী ছিল না। ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের জন্মই হয়েছে স্বৈরতন্ত্রের গর্ভে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল আদর্শকে ভূলুণ্ঠিত করার মধ্য দিয়ে। তারাই স্বাধীন বাংলাদেশে বহুত্বের সমন্বয়বাদী উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ধারাকে নস্যাৎ করেছে।

বিএনপির শাসনামলে সমগ্র বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের এক অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যখনই তারা ক্ষমতায় এসেছে তখনই বিরোধী মতামত দমনের লক্ষ্যে নির্বিচারে অত্যাচার-পীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। একুশে আগস্টের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন ও গোষ্ঠী স্বার্থ চরিতার্থ করতেই আবর্তিত হয়েছে বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শ।

গতানুগতিক অপরাজনীতির ধারা পরিহার করে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী হয়ে পথ চলার জন্য বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এতে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সমৃদ্ধ হবে।

ডব্লিউজি/এমএ

শেয়ার করুন:

Recommended For You

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *