হোটেলে কী করছিলেন সায়ন্তিকা-জায়েদ, প্রশ্ন প্রযোজকের

‘ছায়াবাজ’ সিনেমার শুটিং শেষ না করে মাঝপথে কলকাতায় ফিরে গেছেন পশ্চিমবঙ্গের নায়িকা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর ফলে আটকে গেছে তাজু কামরুল পরিচালিত সিনেমাটি। প্রযোজক মনিরুল ইসলামের দাবি, নৃত্য পরিচালক মাইকেল বাবুর সঙ্গে কাজ করবেন না বলেই ঢাকা ছেড়েছেন সায়ন্তিকা। সঙ্গে এটাও জানান, মাইকেলের বিরুদ্ধে সায়ন্তিকা হাত ধরার যে অভিযোগ করেছেন, তা সত্য নয়। গতকাল শনিবার এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে কথা বলেছেন সায়ন্তিকা। সেখানে অভিনেত্রী দুষেছেন প্রযোজককেও। এবার প্রযোজক মনিরুল ইসলাম জবাব দিলেন সমস্ত অভিযোগের। পাশাপাশি তুললেন নতুন কিছু প্রশ্ন!

সায়ন্তিকা দাবি করেছেন, নৃত্য পরিচালক নয়, বরং মূল সমস্যার নেপথ্যে সিনেমার প্রযোজক। কোনো ধরনের পরিকল্পনা ছাড়াই শুরু হয়েছে ‘ছায়াবাজ-এর শুটিং। বারবার চেষ্টা করেও টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান পাননি তিনি।

সায়ন্তিকার এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রযোজক মনিরুল ইসলাম সায়ন্তিকার বিরুদ্ধে অপেশাদার আচরণের অভিযোগ আনেন। দেশের একটি সংবাদপত্রকে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সায়ন্তিকার সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও হাস্যকর। হাত ধরা নিয়ে সায়ন্তিকার সমস্যা মাইকেল বাবুর সঙ্গে। তিনি পরিচালককে ফোন করে মাইকেল বাবুকে মারতেও চেয়েছিলেন। এখন আমার বিরুদ্ধে সায়ন্তিকা কেন অভিযোগ করছেন, সেটাই তো বোধগম্য নয়। আমার সঙ্গে তার সমস্যা হলে মাইকেলকে কেন বসিয়ে রাখবেন? একজন তারকা যদি নিজের ব্যক্তিত্ব ধরে রাখতে না পারেন, তাহলে আর কী বলার আছে?’

শুটিংয়ে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ প্রসঙ্গে মনিরুল বলেন, ‘কীভাবে শুটিং হবে, এটা ঠিক করেন পরিচালক। আগে থেকে পরিকল্পনা ছিল গানের দৃশ্য দিয়ে শুরু হবে শুটিং। অপেশাদার আচরণ আমি নই, সায়ন্তিকা করেছেন। চুক্তির বাইরে আমরা তাকে ৫০ হাজার রুপি দিয়েছি পোশাকের জন্য। অথচ তিনি কোনো পোশাক নিয়ে আসেননি। এরপর আবার ড্রেসম্যান মনিরকে দিয়ে পোশাকের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সেই পোশাকগুলোও সায়ন্তিকা ফেরত দিয়ে যাননি।’

প্রযোজক মনিরুল আরও বলেন, ‘মাইকেলের ডিরেকশনে গানের শুটিং করার সময় ড্রেস পরিবর্তন করার জন্য বেলা ২টায় হোটেলে যান নায়ক-নায়িকা। ফিরে আসেন সন্ধ্যা ৬টায়। ড্রেস চেঞ্জ করতে চার ঘণ্টা সময় লাগে, এমনটা কখনো দেখিনি। এ ছাড়া যেদিন আমরা শুটিং প্যাকআপ করে পুরো ইউনিট নিয়ে চলে আসি, সেদিন নায়ক-নায়িকা হোটেলেই থেকে যান। ওই দিন তারা সেখানে কী করছিলেন? এ প্রশ্নের জবাব তারা কি দেবেন? এ কথাগুলো কখনো সামনে আনতে চাইনি। কিন্তু এখন আর চুপ করে থাকতে পারলাম না।’

উল্লেখ্য, তাজু কামরুল পরিচালিত ‘ছায়াবাজ’ সিনেমায় সায়ন্তিকার সাথে নায়ক হিসেবে কাজ করছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত-সমালোচিত নায়ক জায়েদ খান।

নৃত্য পরিচালক পরিবর্তন নিয়ে প্রযোজক মনিরুল বলেন, ‘চারটি গানে তিনজন নৃত্য পরিচালকের কাজ করার কথা। প্রথম গানটি করেছিলেন সাইফ খান কালু। তার আরেকটি গান ছিল শিশুশিল্পীকে নিয়ে। সে গানটি পরে করার কথা। তাই কালু চলে এসেছেন। সেখানেই তাকে তার পেমেন্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর পরিচালক কাকে দিয়ে নৃত্য পরিচালনা করাবেন, সেটা তার বিষয়। সায়ন্তিকা মাইকেলকে বলেছেন, ‘‘বাচ্চা ছেলে’’। মাইকেল তো নৃত্য পরিচালক সমিতির সদস্য। নিশ্চয়ই তার যোগ্যতা না থাকলে তিনি কোনো সংগঠনের সদস্য হতে পারতেন না। মাইকেলের বিরুদ্ধে এমন কথা বলে সায়ন্তিকা আমাদের পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে অসম্মান করেছেন।’

চিত্রনাট্য ও শট ডিভিশন আগে থেকে জানালে কাজটি শেষ করতে চান সায়ন্তিকা—নায়িকার এমন মন্তব্যে অবাক হয়েছেন প্রযোজক। তার কথায়, ‘সায়ন্তিকাকে তিন মাস আগে গল্প পাঠানো হয়েছে। তিনি যদি গল্প না পড়ে অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে কী করার! আর চিত্রনাট্য না পড়ে তিনি কীভাবে সিনেমায় অভিনয়ের জন্য রাজি হয়ে গেলেন।’

নায়িকা ও প্রযোজকের পাল্টাপাল্টি এমন অভিযোগে ‘ছায়াবাজ’ সিনেমাটি নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে এ বিষয়ে জানতে সিনেমাটির পরিচালক তাজু কামরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শেয়ার করুন:

Recommended For You