নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার

বরগুনার তালতলীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে চলছে নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নিবন্ধন নবায়ন না থাকা ও নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগে বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে গত ২৬ আগস্ট উপজেলার নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ ৪টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের প্যাথলজির কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে এই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবাধে চলছে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।

উপজেলার ৪টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে বেশিরভাগ সময়েই চিকিৎসক থাকেন না। নেই প্রশিক্ষিত সেবিকা ও প্যাথলজিস্ট। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রক্ত, মলমূত্রসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করছেন অদক্ষ কর্মীরা। ফলে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ প্রতিনিয়তই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তালতলী উপজেলায় ৫টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ২টি ক্লিনিক ও ৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরকারি নীতিমালায় অন্যতম শর্ত হল নির্দিষ্ট শয্যাসংখ্যা, একটি প্যাথলজি বিভাগ, একটি তথ্য সেবাদান কেন্দ্র, অপেক্ষমাণ কক্ষ, নমুনা সংগ্রহের আলাদা কক্ষ, পৃথক পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড, কেবিন থাকতে হবে। এছাড়া সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি, কমপক্ষে তিনজন সেবিকা ও একজন টেকনোলজিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক থাকলেও ২টি ক্লিনিক ও ২টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সরকারি নীতিমালার বেশিরভাগ শর্তই মানছে না কর্তৃপক্ষ। ক্লিনিকগুলোতে যোগ্যতা অনুযায়ী সেবিকা ও টেকনোলজিস্ট পাওয়া যায়নি।

গত ২৬ আগস্ট বরগুনা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ফজলুল হকের নেতৃত্বে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাকিলা আক্তারসহ স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এসময় ৫টির ভেতরে ৪টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যাক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। এর মধ্যে নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রেখেছে।

এ ব্যাপারে নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আবুল হোসেন জোমাদ্দার বলেন, আমি কিছুই জানি না। তবে শেয়ার মালিক হারুন অর রশিদ বলেন, বন্ধের এক দিন পরেই আমাদের চালুর অনুমতি দিয়েছে। চালু করতে কে বলেছে জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে য়ান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাকিলা আক্তার বলেন, নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালুর কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবুও বন্ধের পরের দিনই চালু করেছে। এবিষয়ে আমি সিভিল সার্জনকে জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নিবেন।

বরগুনা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, তালতলী উপজেলার ৪টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করে অব্যবস্থাপনার প্রমাণ পেয়েছি। সরকারি শর্তানুযায়ী লাইসেন্স নবায়ন, নির্দিষ্টসংখ্যক চিকিৎসক, সেবিকা না থাকায় প্যাথলজির সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখানে সরকারি বিধিমালার অধিকাংশ শর্তই মানা হয়নি। অবৈধভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করলে তাদের নিবন্ধনের আবেদন বাতিলের সুপারিশ করা হবে মন্ত্রণালয়ে।

শেয়ার করুন:

Recommended For You