
ওজন ১ মাসের মধ্যে ১০ শতাংশ কমলে সতর্ক হতে হবে। আর তা যদি কোনও চেষ্টা ছাড়াই হয়, তবে বুঝতে হবে বড়সড় অসুখ বাসা বেঁধেছে শরীরে। কী কী কারণে এমন হয়? জানালেন চিকিৎসক।
ওজন বেশি থাকা ভালো নয়। নানা অসুখ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। তবে অহেতুক ওজন কমলেও সতর্ক হতে হবে। কারণ হু হু করে কোনও চেষ্টা ছাড়া ওজন নেমে যাওয়াটা আদতে সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে। এর পিছনে থাকতে পারে গুরুতর কিছু অসুখ।
বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, ওজন বেশি থাকা ক্ষতিকর। ওবেসিটিকে তাই একটি রোগ হিসাবেই দেখতে শুরু করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ওবেসিটি থেকে হার্টের অসুখ, ডায়াবিটিস, প্রেশার, কোলেস্টেরল ইত্যাদি হয়। তাই সাবধান।
তবে অহেতুক ওজন কমাও কিন্তু ভালো নয়। এর পিছনে থাকতে পারে খতরনাক কোনও অসুখ। আপনি হয়তো ভাবতেও পারছেন না তার গুরুত্ব। তাই আপনার কোনও চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমলে সরাসরি চিকিৎসকের কাছে আসুন। তিনিই সঠিক পথ দেখাতে পারবেন। অন্যথায় রোগ শরীরের ভিতর বাড়তে পারে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতার বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, নানা কারণে কমতে পারে ওজন। এবার ১ মাস বা তারও কম সময়ে চেষ্টা ছাড়াই ১০ শতাংশ ওজন কমলে আপনাকে সতর্ক হতে হবে। কারণ এই আনএক্সপ্লেইনড ওয়েট লসের পিছনে কিছু অসুখ থাকতে পারে।
১. ডায়াবিটিস হতে পারেঃ-
ডা: রুদ্রজিৎ পাল জানান, ডায়াবিটিস এখন ঘরে ঘরে। এই রোগটি নিজের ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। তবে মাথায় রাখতে হবে যে এই অসুখ কিন্তু দ্রুত সমস্যা তৈরি করে। ওজন কমতে পারে রোগীর। এমনকী তা হু হু করে কমে থাকে। এছাড়া রাতে বারবার প্রস্রাব পাওয়া থেকে শুরু করে, ক্লান্তি সহ নানা লক্ষণ থাকতে পারে। তাই এই নিয়ে সতর্ক হয়ে যান। চিকিৎসকের কাছে আসুন।
২. হাইপারথাইরয়েডঃ-
ডা: রুদ্রজিৎ পাল জানান, থাইরয়েড হরমোন অনেকসময় শরীরে বেশি তৈরি হয়। এবার এই হরমোন বেশি পরিমাণে শরীরে থাকলে নানা সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে ওজন দ্রুত গতিতে কমে। এই অসুখ কিন্তু খুবই জটিল। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফেলুন। এছাড়া হাইপারথাইরয়েড থাকলে চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসে বাইরের দিকে। এমন উপসর্গ দেখলেই তাই অপেক্ষা নয়। তবেই ভালো থাকতে পারবেন।
৩. ক্রনিক ইনফেকশনঃ-
ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, এইচআইভি, টিবি, কালাজ্বরের মতো ক্রনিক ইনফেকশন হলে সাবধান। কারণ এই অসুখে দ্রুত ওজন কমে। আসলে সংক্রমণের কারণে শরীরে মেটাবলিজম বেড়ে যায়। এর থেকে জটিলতা হতে পারে। তাই ক্রনিক ইনফেকশন হলে একটু সতর্ক থাকুন। আর যাঁরা বুঝতে পারছেন না যে শরীরে সমস্যা রয়েছে, তাঁরা ওজন কমলেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ফেলুন। চিকিৎসায় সমস্যা মিটবে দ্রুত। তবে ওষুধ খেতে হবে নিয়মমতো।
৪. অপুষ্টিঃ-
আমাদের দেশে এখন অপুষ্টির আশঙ্কা অনেকটাই কম। তবে মাথায় রাখতে হবে যে কিছু কিছু মানুষ এখনও খেতে পান না। এছাড়া আরও একদল রয়েছেন যাঁরা খেতে পছন্দ করেন না। এনাদের কাছে সব থাকার পরও অনাহারে থাকা পছন্দ করেন। এবার এই মানুষগুলিকে নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তবেই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আসলে শরীরে কার্ব, প্রোটিন, ফ্যাটের একটা সামঞ্জস্য চাই। এই ভারাসাম্যের মাধ্যমে মানুষ ভালো থাকতে পারেন। নইলে অপুষ্টি হয়।
৫. ম্যাল অ্যবসর্পশনঃ-
ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, অনেক মানুষের ওজন কমার পিছনে থাকে ম্যাল অ্যাবসর্পশন। এই মানুষগুলি খেলেও তা শরীরে গৃহীত হয় না। এক্ষেত্রে সিলিয়াক ডিজিজ বা জিয়ারডিয়া ইনফেকশন থেকে এই সমস্যা হতে পারে। তাই সতর্ক হন। এবার থেকে এই লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যান। ভালো থাকতে পারবেন অনায়াসে।
সূত্রঃ এই সময়
ডব্লিউজি/এমআর