
সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবি – সংগৃহীত,
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন, “২০১৬ সালে আমি সাত মাসের জন্য গুম হই। অনেকে হয়ত মনে করেছে ভালো লাইন ঘাট করে বের হয়েছি। কিন্তু বাংলাদেশে এমন কোন নজির নেই, লাইন ঘাটের কারণে আওয়ামী লীগের জুলুম থেকে কেউ বেঁচেছে। শুধুমাত্র মানুষের দোয়ার কারণেই গুম থেকে জীবিত ফিরে আসতে পেরেছি। ভরশা ছিলো রাঙ্গুনিয়ার মানুষ, আমার বাবার জন্য লড়াই করেছিলো তাঁরা। বাবাকে হারানোর পর দেখেছি, আপনারা মাঠে ছিলেন, দলকে ধরে রেখেছিলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জন্য লড়াই করেছিলেন। গুম থেকে ফেরার পর ছবিতে দেখেছি প্রতি সপ্তাহেই আপনারা আমার জন্য প্রতিটি মসজিদ মাদ্রাসায় দোয়া করেছিলেন। আমি আপনাদের কাছে ঋণী। এই ঋণ শোধ করার জন্যই আপনাদের কাছে এসেছি। আমার ভোট লাগবে না, দোয়া লাগবে। কারণ এটার কারণেই এখনো জীবিত আছি।
ডব্লিউ জি নিউজ সর্বশেষ জানতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন।
১৫ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপেজেলার শিলক ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে শিলক এম শাহ আলম চৌধুরী স্কুল মাঠে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারেক রহমান সাহেব এই বাংলাদেশ মেরামতের জন্য ৩১ দফা লিখিতভাবে পাঠিয়েছে। এটা বাস্তবায়ন মঞ্চে দাড়ানো নেতৃবৃন্দের দ্বারা সম্ভব নয়। এটা আপনাদের মতামত, পরিশ্রম, সহায়তা, দোয়া ছাড়া তার একটি দফাও বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। জনগণের সম্পৃক্ততায় ৩১ দফা বাস্তবায়ন সম্ভব”
শিলক ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মোকাররম হোসেন বান্টুর সভাপতিত্বে এবং আবুল হোসেন চৌধুরী ও মহসিন তালুকদারের যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা শওকত আলী নূর, এডভোকেট কামাল হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, নিজামুল হক তপন, হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ সিকদার, হেলাল উদ্দিন শাহ, ইউসুফ চৌধুরীর, ভিপি আনছুর উদ্দিন, আবদুল করিম চৌধুরী, আবদুল গফুর খান, মাকসুদুল হক, পারভেজ মোশাররফ, ফারুকুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম বাবর, শওকত তালুকদার, জামশেদ মেম্বার, নাজিম চেয়ারম্যান, বাবর আলম তালুকদার, আবু বক্কর, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, তাহনিয়াজ মোরশেদ তোহা, নিশাত সিকদার, খায়েজ আহমেদ বাচা, মহসিন তালুকদার প্রমুখ।
এমপি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “সকলেই অপেক্ষা আছে, কে এমপি হবে। তবে আমি সেই অপেক্ষায় নেই। মাঠে নেমেছি, জনগণের সেবা করার জন্য। এমপি হবো কি হবো না তা রাব্বুল আলামিন ঠিক করে দেবেন।”
বিএনপিতে গ্রুপিং প্রসঙ্গে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “সকলেই বলি, রাঙ্গুনিয়ার মধ্যে বিএনপির অনেক গ্রুপিং হয়ে গেছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির কোন গ্রুপিং নাই। যারা যারা বিএনপিকে ভালোবাসে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ভালবাসে, বেগম জিয়াকে ভালবাসে এবং তারেক রহমান সাহেবকে ভালবাসে তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। সবার হয়ত দলীয় পদ পদবী কিংবা উন্নতির জন্য একটা পরিশ্রম রয়েছে। তবে যখন নির্বাচনের সময় চলে আসবে এবং প্রার্থী ঘোষণা হবে—তখন দল যাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করবে আমরা সকলেই তার জন্য কাজ করবো। ”
রাউজান না রাঙ্গুনিয়া স্লোগান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সবাই বলে রাউজান না রাঙ্গুনিয়া। কিন্তু আমার বাবা বহু আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলো, রাঙ্গুনিয়া রাঙ্গুনিয়া। বাবার সিদ্ধান্তের এটা আমি বদলাতে পারি না। তার উপর রাঙ্গুনিয়ার মানুষ যখন বলে আমি তাদের সন্তান, তখন তাদের পিঠ দেখানোর মতো মানুষ আমি না।”
নারায়েতকবির স্লোগান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে অনেক হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মালম্বী ভাইয়েরাও এসেছেন। আমি এই তকবির আমি সকলের জন্যেই দেয়। কারণ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে ফজলুল কাদের চৌধুরীর নাতির ঈমান শক্ত আছে, এটা প্রমাণ দিতেই এই তকবির বার বার দেয়। এটা আমাদের অন্যান্য ধর্মালম্বী ভাইয়েরাও বিশ্বাস করে, কারণ মঞ্চে দাড়িয়ে আমি উপর আল্লাহর উপর বিশ্বাসের কথা বলি।”
হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “গত ১৬ বছরে অনেক সড়ক মেরামত করা হয়নি। এই সড়কগুলোর মেরামত করার জন্য তালিকা করে দেবেন, তা আগামী ইলেকশনের আগেই যাতে এগুলো মেরামত করতে পারি।”
এদিকে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর জনসভাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে উৎসব আমেজ দেখা দেয়। ইউনিয়নের প্রতিটি সড়কের মোড়ে মোড়ে ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে নেতাকে স্বাগত জানান তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ। ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে পৃথক মিছিল সহকারে যোগদেন নেতৃবৃন্দ। উপজেলার অন্যান্য এলাকা থেকেও মিছিল নিয়ে যোগ দেন নেতাকর্মীরা। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই পুরো মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এমন জনসভা তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের উৎসাহ যোগাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি II ডব্লিউ জি নিউজ