
২৫ আগষ্ট, সোমবার – ২০২৫,

ছবি – সংগৃহীত
প্রায় দুই দশকের দীর্ঘ বিরতির পর আবারও ফিরছে শিশু-কিশোরদের নিয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের দেশ ব্যাপি প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা নতুন কুঁড়ি।সেটি সফল করতে সাতক্ষীরায় নতুন কুঁড়ি-২০২৫ এর প্রচারণা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৫ আগষ্ট) সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।
সাতক্ষীরা জেলা তথ্য অফিসার মো. জাহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় নতুন কুঁড়ির মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক)বিষ্ণু পদ পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)রিপন বিশ্বাস, জেলা কালচারাল অফিসার ফাইজা হোসেন অন্বেষা,জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার মাওলানা আবুল খায়ের, সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম টুকু, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আলাউদ্দীন, সাতক্ষীরা আলিয়া মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. আক্তারুজ্জামান, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আসাদুজ্জামান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু,জেলা জামায়েতের নায়েবে আমির ফকরুল হাসান লাভলু,সঙ্গীত শিল্পী আবু আফ্ফান রোজ বাবু, সাংস্কৃতিক সংগঠক হেনরি সরদার, কবি মনিরুজ্জামান ছট্টু,দিপালোক একাডেমির পরিচালক বরুণ ব্যানার্জী, সাংস্কৃতিক সংগঠক পল্টু বাসার, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো.মোমিনুল ইসলাম, আলিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আব্দুল লতিফ, রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফুর রহমান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আব্দুল গনি আসাদ, চায়না ব্যানার্জী প্রমুখ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন,সাতক্ষীরার ফুল কুঁড়ির আব্দুল্লাহ আল মামুন, কপোতাক্ষ শিল্পী গোষ্ঠীর শারাফাত হোসেন লিটিল সহ জেলা বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ডব্লিউ জি নিউজ সর্বশেষ সংবাদ জানতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন।
নতুন কুঁড়ি’র ইতিহাস
১৯৬৬ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনে প্রথম প্রচারিত হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। অনুষ্ঠানের নাম রাখা হয়েছিল কবি গোলাম মোস্তফার ‘কিশোর’ কবিতা থেকে। যার প্রথম ১৫ লাইন অনুষ্ঠানের সূচনাসংগীত হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
১৯৭১ এর স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে মোস্তফা মনোয়ারের প্রযোজনায় আবার শুরু হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। সে সময় বিটিভির অন্যতম আলোচিত এই অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে শিশু-কিশোরদের স্বপ্নের মঞ্চ। নানা প্রান্ত থেকে উঠে আসা তরুণেরা গান, নাচ, অভিনয়, আবৃত্তি, গল্পবলা, কৌতুকসহ বিভিন্ন শাখায় নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ পান। ২০০৫ সাল পর্যন্ত চলে এ অনুষ্ঠান। পরে নানা কারণে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয় বিটিভি। ২০২০ সালে অনুষ্ঠানটি আবার শুরু করার জন্য আবেদন পত্র সংগ্রহ ও বাছাই পর্বের তারিখ ও ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কোভিড মহামারির কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি।
নতুন কুঁড়ির তারকা
তিন দশকে নতুন অনেক তারকার জন্ম দিয়েছে নতুন কুঁড়ি। অনেকে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, নাট্যাঙ্গন ও সংগীতজগতে নিজস্ব অবস্থান গড়ে তুলেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন তারানা হালিম, রুমানা রশিদ ঈশিতা, তারিন জাহান, মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ইমরোজ তিশাসহ আরও অনেকে। এ তালিকায় আছেন সামিনা চৌধুরীসহ অনেক জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীও।
নতুন কুঁড়ি-২০২৫ এর আবেদন
গত ১৫ আগস্ট থেকে আবেদন শুরু হয়েছে চলবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সারা দেশকে মোট ১৯টি অঞ্চলে ভাগ করে প্রাথমিক বাছাই হবে। এসব অঞ্চল গুলো হলো খুলনা-১ (সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট), খুলনা-২ (যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল), খুলনা-৩ (কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা), ঢাকা-১ (ঢাকা, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ), ঢাকা-২ (মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী), ঢাকা-৩ (ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর), ময়মনসিংহ-১ (ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা), ময়মনসিংহ-২ (টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর), সিলেট (সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ), রংপুর-১ (রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা), রংপুর-২ (দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়), রাজশাহী-১ (রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা), রাজশাহী-২ (বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ), বরিশাল-১ (বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর), বরিশাল-২ (পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা), চট্টগ্রাম-১ (চট্টগ্রাম, কক্সবাজার), চট্টগ্রাম-২ (রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি), চট্টগ্রাম-৩ (কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া), চট্টগ্রাম-৪ (নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী)। প্রতিটি অঞ্চলের শিল্পকলা একাডেমি ভবন প্রাথমিক বাছাইয়ের ভেন্যু হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে।
নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার ধরন
এবারের নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় মূল তিনটি বিষয়সহ মোট নয়টি বিষয়ে অনুষ্ঠিত হবে তার মধ্যে অভিনয়, আবৃত্তি, গল্প বলা বা কৌতুক, সাধারণ নৃত্য বা উচ্চাঙ্গ নৃত্য, দেশাত্মবোধক গান বা আধুনিক গান,রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত,লোকসংগীত এবং হামদ-নাত। বয়সসীমা বয়সসীমা অনুযায়ী থাকবে দুটি শাখা: ‘ক’ শাখা (৬–১১ বছর) এবং ‘খ’ শাখা (১১–১৫ বছর)। বিভাগীয় বাছাই শেষে চূড়ান্ত বাছাই ও ফাইনাল পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায়। ফাইনাল প্রতিযোগিতা হবে ২ থেকে ৬ নভেম্বরের মধ্যে।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি II ডব্লিউ জি নিউজ