
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবি – সংগৃহীত,
খুলনায় তিন দফা দাবিতে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার পর থেকে খুলনার শিববাড়ী মোড়ে এ সমাবেশ হয়।
এতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি), বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ডব্লিউ জি নিউজ সর্বশেষ জানতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন।
সমাবেশে ৩ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো— ১. ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। ২. টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়ের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। ৩. ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নন-অ্যাক্রেডিটেড বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএ’ইটিই অ্যাক্রেডিটেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েটের শিক্ষার্থী রাজিন বলেন, “২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি সার্কুলার দেওয়া হয়েছিল। সড়ক মন্ত্রণালয়ে ২৯ জন প্রমোশন পেয়ে ১০ম গ্রেড থেকে ৯ম গ্রেড হয়েছিল এবং ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং নেওয়া হয়েছে মাত্র একজন। এভাবেই তারা আমাদের সিটগুলো নিয়ে নিচ্ছে। আমাদের দাবিগুলোর মাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি প্রদান আর তাদের দাবিগুলোর মাধ্যমে গায়ের জোরের মাধ্যমে চাকরি প্রদান উঠে এসেছে। ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানদের মাফিয়া সিন্ডিকেট আমাদের যোগ্য দাবির মাধ্যমে ভাঙতে হবে। অনেক সময় ১০ম থেকে ৯ম গ্রেডে প্রমোশনের মাধ্যমেই নেওয়া হচ্ছে, নিয়োগের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে না। এ আন্দোলন এখন আর প্রকৌশলীদের আন্দোলন না, এটি এখন সকল শিক্ষিত ও পুরো জাতির আন্দোলন হয়ে গেছে।”
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুবাশ্বির আমিন বলেন, “২৪’র অভ্যুত্থানের পরেও আমাদের বৈষম্যের শিকার করা হচ্ছে। ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানরা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের অধিকার নষ্ট করছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা সত্ত্বেও পুলিশের মার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অব্যবস্থাপনার শিকার হতে হয়েছে। অবিলম্বে আমাদের ৩ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।”
প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সাকিবুল হক লিপু বলেন, “কেন টেকনিশিয়ানদের সাথে ইঞ্জিনিয়ারদের লড়তে হবে? এটা পুরো বাংলাদেশ, রাষ্ট্র, সরকার ও সকল নীতিনির্ধারকদের জন্য লজ্জার। ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানরা ভুয়া ইঞ্জিনিয়ার সেজে পুরো ইঞ্জিনিয়ার সেক্টরটাকে দখল করে রেখেছে। তাদের দখলদারিত্ব দেখে ইসরায়েল রাষ্ট্রের কথা মনে পড়ে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা যেমন বাংলাদেশ দখল করে রেখেছিল, তেমনি ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানরা এখন ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরটা দখল করে রেখেছে। যারা এসএসসির পর শেষ দিকের শিক্ষার্থী ছিল, এখন আমাদের লড়তে হচ্ছে তাদের সাথে। ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানরা নামের আগে ‘ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার’ না লাগিয়ে শুধুমাত্র ‘ইঞ্জিনিয়ার’ ট্যাগ লাগিয়ে নিজেদের ইঞ্জিনিয়ার দাবি করে।”
যবিপ্রবি ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ডিন ড. মো. আমজাদ হোসেন বলেন, “আমাদের দাবি হচ্ছে আমাদের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। মাস্টার্স পাস করা কোনো শিক্ষার্থী কি অনার্স পাস করা কোনো ক্রাইটেরিয়ার সার্কুলারে আবেদন করতে পারবে না? ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানরা ১০ম থেকে ৯ম গ্রেডে ৩৩ শতাংশ কোটার মাধ্যমে প্রমোশনের কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে তা অনেক বেশি।”
ডব্লিউ জি নিউজ ডেস্ক