ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে পিছিয়ে গেছে সাত কলেজের সকল কার্যক্রম। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩জুলাই ) সাত কলেজের ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখা যায় ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কলেজ ও বিষয় পছন্দক্রমের ফলাফল গত ৩০ জুনের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। এতে করে হতাশায় রয়েছেন ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা।
এদিকে সাত কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষ ২০২৩ সনের ফরমপূরণ যথাসময়ে শুরু হলেও শেষ সময়ে এসে শিক্ষকদের এই আন্দোলনের কারণে পূর্ব ঘোষিত সম্ভাব্য তারিখ অনুযায়ী ১ জুলাই থেকে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এখনও ফলাফল প্রকাশিত হয়নি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, ফিন্যান্স ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের। ফলাফল প্রকাশ ও পরবর্তী বর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
অন্যদিকে পূর্ব ঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, অনার্স ২য় বর্ষের ফরমপূরণের তারিখ ২০ জুন থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এই কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি। পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার কারণে একই শঙ্কায় পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, গত ১ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রেজিস্ট্রার ভবনের সকল অফিস কর্মবিরতি পালন করছে। এসময়ে সাত কলেজের ফলাফল প্রকাশ, ফরম পূরণ, তথ্য সংশোধন, নতুন ফরম পূরণের নোটিশ, ফলাফল সমন্বয় কার্যক্রম, সার্টিফিকেট ও মার্কশিট উত্তোলনের জন্য আবেদন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম মেরিট প্রকাশসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে সাত কলেজের ক্লাস পরীক্ষা ও বিভাগীয় কার্যক্রম চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন: সাত কলেজের বিষয় পছন্দক্রমের ফলাফল আজ-কালের মধ্যে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের বিষয় নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলা হয়। এই বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদা সুলতানা অণু বলেন, এবছর আমি প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছি। তবে তৃতীয় বর্ষের দুটি বিষয়ে মান উন্নয়ন থাকায় এবার পুনরায় পরীক্ষা দিয়েছিলাম। সাবজেক্ট দুটিতে পাসও করেছি। কিন্তু ফলাফল সমন্বয় না হওয়ার কারণে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, তৃতীয় বর্ষের ফলাফল প্রকাশের মাসখানেক সময় কেটে গেলেও এখনো সমন্বয় হয়নি। এদিকে তার সহপাঠীরা স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়ে ক্লাসও শুরু করে দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাণিবিদ্যা বিভাগেই ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থীর ফলাফল সমন্বয় না হওয়ার কারণে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে পারছেন না। স্নাতক পরবর্তী উচ্চ শিক্ষা নিয়ে এভাবেই শঙ্কায় দিন কাটছে এসব শিক্ষার্থীদের।
এদিকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যেই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবেন। অনেক ধরনের অপপ্রচার চলছে এ আন্দোলন নিয়ে। বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এ আন্দোলন করা হচ্ছে। মূলত, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্যেই এ আন্দোলন করছে। আর, প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশের শিক্ষকদেরই মূলত জিম্মি করা হচ্ছে।