আব্দুস সালাম দরদী। পেশায় একজন প্রাথমিক শিক্ষক। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেন মানুষের মতো মানুষ হতে। কিন্তু তিনি নিজেই সার্বক্ষণিক অমানুষের কাছে লিপ্ত থাকেন। সুদ কারবার, নারী কেলেংকারী ও প্রকাশ্যে মদ পানের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে বসে মদ পান করার ভিডিও গণমাধ্যমের হাতে এসেছে।
আব্দুস সালাম দরদী মদন পৌরসভার বাড়িভাদেরা রোডের বাসিন্দা। তিনি নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের ধর্মরায় রামধন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি খালিয়াজুরী উপজেলার নূরপুর বোয়ালী গ্রামের লাট মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের বিখ্যাত বাউল সাধক ও মরমী কবি উকিল মুন্সীর ১৩৯তম জন্মদিন উপলক্ষে নিজ গ্রাম নূরপুর বোয়ালী গ্রামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে রাত ব্যাপী উকিল মুন্সীর গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা বাউল শিল্পীরা। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চের এক পাশে চেয়ারে বসে মদ পান করছে প্রাথমিক শিক্ষক আব্দুস সালাম দরদী। প্রকাশ্যে মদ পান করার একটা ভিডিও এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়াও শিক্ষক আব্দুস সালাম দরদীর মদ পানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে অনেক লোকজন পোস্ট করেছেন। তিনি প্রায় সময়েই মদ পান করেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একজন শিক্ষক (সরকারি চাকুরীজীবি) হয়েও প্রকাশ্যে মাদক সেবন করায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনুষ্ঠানে অংশ্রগ্রহণকারী একাধিক ব্যাক্তি জানান,‘ সালাম দরদী একজন শিক্ষক। তিনি সরকারি চাকুরী করে। কিন্তু মঞ্চে বসেই মদ খেয়েছেন। মদ খেয়ে মাতলামিও করেছেন। একজন শিক্ষক যদি মাদকে আসক্ত হয় এবং প্রকাশ্যে মদ পান করে তাহলে ছাত্রদের কি শিক্ষা দিবে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের দাবি জানান তারা।’
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষক আব্দুস সালাম দরদী জানান,‘একটা চক্র শক্রতা করছে আমার সাথে। এই বিষয়টা (মদ খাওয়ার) নিয়ে যেন কোন সমস্যা না করে আমার একজন আত্মীয় সাংবাদিকদের সাথে সমাধান করে দিয়েছিল। এর পরেও বিষয়টি নিয়ে বার বার কথা হচ্ছে। ঘটনাটি একটু প্রজেটিভ ভাবে দেখার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।’
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান খান জানান,‘সরকারি চাকুরীর নীতিমালা অনুযায়ী কেউ মদ পান করতে পারে না। শিক্ষক যদি মদ পান করে তা আরো দুঃখজনক। আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক প্রকাশ্যে মদ পান করেছে বিষয়টি মাত্রই জানলাম। এ ব্যাপারে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।