ডবাগেরহাটের সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে কুমিরের আক্রমনে মোশাররেফ হোসেন গাজী (৫৫) নামের এক মৌয়াল নিহত হয়েছে।
শনিবার (০৮ জুন) দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল খাল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়। নিহত মোশাররেফ হোসেন গাজী ওরফে মোশা বন লোগোয়া খুলনার দাকোপ উপজেলা ঢাংমারী গ্রামের আমির আলী গাজীর ছেলে।
বন বিভাগের দাবি, সুন্দরবনে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার মাঝে মোশাররেফসহ বন সংলগ্ন গ্রামের কয়েক বাসিন্দা মধু সংগ্রহের জন্য শনিবার সকালে অবৈধভাবে ঢাংমারি এলাকা দিয়ে বনে প্রবেশ করে। করমজল খাল দিয়ে যাবার সময় একটি কুমির ওই মৌয়ালকে টেনে নিয়ে যায়। ঢাংমারী নদী সুন্দরবন থেকে গ্রামকে আলাদা করেছে। সেই নদী পাড়েই বাড়ি নিহত মোশাররেফের।
ঢাংমারী এলাকার বাসিন্দা মো. মাহাবুব হোসেন বলেন, মূলত বন বিভাগের চোখে ধরা না পড়তে তারা নৌকা ছাড়াই সাতরে বনে ঢুকে। দুপুরে জোয়ার ছিল, তাই পানিও বেশি ছিল। সাতরে খাল পাড়ি দিতে গিয়ে যখন কুমির আক্রমন করে তারা পায়ের নিচে মাটি পায়নি। তাই আর কুমিরের মুখ থেকে ফিরতেও পারেনি। নৌকা নিয়ে বনে গেলে হয়তো তাদের এই বিপদ হতো না।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, অবৈধভাবে নদী পেরিয়ে তারা সাতরে সুন্দরবনের ভেতরে এসেছিল। করমজল খাল পাড়ি দেওয়ার সময় কুমির তাদের উপর আক্রমন করে। তিনজন ডাঙায় উঠতে সক্ষম হলেও কুমিরের আক্রমনে মোশাররেফ হোসেনের মৃত্যু হয়। তাকে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। পরে অপর মৌয়াল ও স্থানীয়রা মিলে খাল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে।
সুন্দরবনের নদী–খালে মাছ ও বনে প্রাণীদের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসের জন্য বনে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এই সময়ে মাছ, কাঁকড়া, মধু আহরণসহ সুন্দরবনে পর্যটকদের প্রবেশও নিষিদ্ধ।