
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, শিশুশ্রম নির্মূল করতে চাই। উন্নত জাতি গঠনে শিশুশ্রম নিরসনের কোন বিকল্প নেই। শিশুদের সুশিক্ষিত করে দক্ষ কারিগরে রূপান্তরিত করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে শিশুশ্রম নিরোধ করা অনেক কঠিন। সকলের সহায়তায় এ কাজ করা সম্ভব হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে শিশুশ্রম প্রধান অন্তরায়। তাই সবাইকে শিশুশ্রম নিরসনে সচেতন হয়ে কাজ করে যেতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ হোটেলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও ইউনিসেফ এর সহযোগিতায় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ও শ্রম অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে শিশুশ্রম নিরসন বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মশালায় বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম’র সভাপতিত্বে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন, অতিরিক্ত সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, যুগ্মসচিব হাজেরা খাতুন, ইউনিসেফের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফিল্ড অফিসের চীফ মিস মাধুরী ব্যানার্জী, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান বক্তৃতা করেন।
এসময় বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা, জাতীয় শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, চট্টগ্রাম স্টীল বানিজ্য ফাউন্ডেশন ও বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে কর্মশালায় শিশুশ্রম নিরসন কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হয়। কর্মপরিকল্পনার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং উপস্থিত প্রতিনিধিরা শিশুশ্রম নিরসনে তাদের মূল্যবান মতামত তুলে ধরেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধু শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন এবং তারই ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় ১৯৭২ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থায় বাংলাদেশ সদস্য পদ লাভ করেন। শিশুদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে জাতীয় শিশুনীতি প্রণয়ন করেন। তারই ধারাবাহিতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুশ্রম নিরসনে নিরসল কাজ করছেন।
বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে ৪৩টি সেক্টরকে ঝূঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার জন্য আইন পাশ করেছে।তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার শিশুশ্রম মোকাবিলায় জাতীয় পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য নীতি গ্রহণ করেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসনের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরে জনবল বৃদ্ধিসহ জনসচেতনা কার্যক্রম সারাদেশে চলমান রয়েছে।
এছাড়াও শিশুশ্রম নিরসনে মাঠ পর্যায়ের জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ সমূহের ভূমিকা রয়েছে। শিশুশ্রমের কুফল সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে, শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং বিদ্যালয়ে শিশুশিক্ষার্থীদের ঝড়ে-পড়া রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।