বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট– এফডিআই) উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিরা যে পরিমাণ বিনিয়োগ করেছেন, তার ৭০ শতাংশই হয়েছে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরাতে একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ২২টিরও বেশি দেশে রয়েছে বাংলাদেশের বিনিয়োগ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে ভারতে। ২০২৩ সালে দেশটিতে বাংলাদেশের নিট সরাসরি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৫ মিলিয়ন ডলার, যা দেশের মোট বিদেশি বিনিয়োগের ৭০ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সেখানে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করেছে ৮ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলার, যা মোট বিনিয়োগের ২৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। এরপরে রয়েছে নেপাল; সেখানে বিনিয়োগ হয়েছে ৩ দশমিক ৫২ মিলিয়ন ডলার, যা মোট বিদেশি বিনিয়োগের ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এদিকে, যুক্তরাজ্যে নিট এফডিআই প্রবাহ ৪ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন এবং হংকং-চীনে ৫ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন ডলার কমেছে।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
ওই প্রতিবেদন বলছে, খাতভিত্তিক বিনিয়োগ বিবেচনায়, আর্থিক মধ্যস্থতাকারী এবং খনি ও খনন সংক্রান্ত কাজ বিনিয়োগের সিংহভাগ পেয়েছে। ২০২৩ সালে, নিট এফডিআই এর বহিঃপ্রবাহ ছিল মোট ২৯ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৪৩ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ওই বছর নিট এফডিআই ইক্যুইটি ক্যাপিটালের বহিঃপ্রবাহ ছিল ১০ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন ডলার; এটিও আগের বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার কমেছে।
এইচএসটিসি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস প্রেসিডেন্ট এম শোয়েব চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ভারত আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ। সেখানকার আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের মতো উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশি অনেক পণ্যের চাহিদা রয়েছে। এসব রাজ্যে রপ্তানি কঠিন হওয়ায় প্রাণসহ বেশকিছু কোম্পানি সেখানে বিনিয়োগ করেছে। এছাড়া, আমাদের দেশে শক্তি উৎপাদনের জন্য জমির স্বল্পতা থাকায় এই সেক্টরেও কিছু বিনিয়োগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি রোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে
ভারতে বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ রয়েছে মন্তব্য করে এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ভারতে কস্ট অব ডুয়িং বিজিনেস (ব্যবসায়ের খরচ) বাংলাদেশের তুলনায় কম। এছাড়া, বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা থাকায় ভবিষ্যতে আরো বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে আশা করি। এর জন্য দুই দেশেরই পদক্ষেপ নিতে হবে।
এদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ এফডিআই-ও কমেছে। ২০২৩ সালে মোট এফডিআই প্রবাহ ছিল ৩ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৮৫৭ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ডলার বা ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ কম। এছাড়া ২০২৩ সাল শেষে বাংলাদেশে মোট এফডিআই ২০ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারে নামে, যা ২০২২ সাল থেকে ৫ দশমিক ১ শতাংশ কম।