রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সাড়ে ৯ মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়েছে। এতে অছাত্র, বিবাহিতসহ চাকরিজীবীরা স্থান পেয়েছে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫-এর (গ) ধারা অনুসারে কোন অছাত্র, বিবাহিত ও চাকরিজীবী কমিটিতে স্থান পাওয়ার কথা নয়। পদবঞ্চিত হয়েছেন অনেক ত্যাগী ছাত্রলীগ কর্মী যা নিয়ে ফেসবুকে চলছে সমালোচনা, ক্ষোভ আর হতাশাজনক পোস্ট।
বুধবার (১৫ মে) রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গঠিত ২০৩ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, ২০২২ সালের ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়।
ডব্লিউ জি নিউজের সর্বশেষ খবর পেতে https://worldglobal24.com/latest/ গুগল নিউজ অনুসরণ করুন
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী পোমেল বড়ুয়াকে সভাপতি ও একই শিক্ষাবর্ষের রসায়ন বিভাগের মাহফুজুর রহমান শামীমকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তখন এই কমিটির মেয়াদ দেওয়া হয়েছিল এক বছর। এরপর গেল বুধবার (১৫ মে) রাতে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সাড়ে ৯ মাস পর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, এই কমিটির অন্তত ৩০ জন নেতার ছাত্রত্ব নেই। তবে তাদের রেখেই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন চাকুরীজীবী ও বিবাহিত স্থান পেয়েছে যা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।
পদ বঞ্চিত মোঃ মাসুদ রানা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে লেখেন, আমার জখমের দাগে এখন ব্যথা করে ভুলতে পারি নাই সেই রাতের কথা। ৭ টা সেলাই আর রক্ত ক্ষরণ, তবুও সবাই আমাকে ভুলে গেছে। একটা প্রোগ্রামে ২০ থেকে ২৫ জন ছোট ভাই নিয়ে সবার আগে আমি উপস্থিত ছিলাম। সবটুকু দিয়ে রাজনীতি করেছি এমন কোন মিছিল মিটিং নেই আমি অংশগ্রহণ করি নাই,। ক্যাম্পাসে কোন ঝামেলা হলে আমি সবার আগে চলে যাই, আমার সবই ছিলো শুধু একটা রেফারেন্স করার মত কেউ ছিলো না। আমার, যাই হোক আমার সকল ছোট ভাইদেরকে অভিনন্দন। যাদের যোগ্যতা নেই ২ টা ছেলে নিয়ে প্রোগ্রামে উপস্থিত হয়। সারাদিন ডেকেও প্রোগ্রামে নিয়ে যাওয়া যায় না। যাইহোক আমি এখনও সেই আমেজে আছি, ছেড়ে দেই নাই, যতদিন আছি আপনার সাথেই আছি থাকবো।
সামাজিক মাধ্যমে আব্দুর রাজ্জাক লেখেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ৩/৪ দিন পর থেকে আমার ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ। তখন থেকে দেখা এখন পর্যন্ত যাদের দেখতেছি হাতে গোনা কয়েকজন অনেক পরিশ্রম করেছে। বেরোবির ছাত্র রাজনীতিতে কতটুকু অবদান ছিলো, সেটা শুধু যারা দেখেছে তারাই জানে। অথচ আমার হল এর সীট নিয়ে তারা অনেক তাল বাহানা করেছে। আসলে রাজনীতিতে সবাই সান্ত্বনা মুলক কথা বলে কিন্তু তারা কারো মনের অবস্থার দিকে একবার তাকিয়ে দেখেও না। বেরোবির ছাত্র রাজনীতিতে ত্যাগিদের অসম্মান করা কতটা সময় উপযোগী শুধু কর্তৃপক্ষ ভালো জানেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বেরোবি ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, কারো অনার্স মাস্টার্স শেষ হওয়া মানেই সে অছাত্র না আর বিবাহিত কেউ কমিটিতে থাকলে প্রমাণসহ অভিযোগ করুক, আমার জানামতে এমন কেউ নেই। আর চাকরিজীবীর বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন কমিটি জমা দিছি তখন কেউ চাকরি করতো না।
এ বিষয়ে বেরোবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম বলেন, আমি এসব নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না, কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে যোগাযোগ করেন। সার্বিক বিষয় নিয়ে বেরোবি ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ প্রকাশনা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম তালুকদার সবুজ বলেন, বিবাহিতের অভিযোগে সুপার কমিটির কয়েকজনকে বাদ দেয়া হইছে, এমন অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে দপ্তর সেলে জানানো হবে।