জাতিকে প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী : প্রতিমন্ত্রী পলক

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই উল্টো পথের যাত্রা থেকে আমাদের দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করেছেন এবং সৃজনশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন মধ্যম আয়ের প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অডিটরিইয়ামে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও দেশের উন্নয়ন” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, “স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমাদের এই স্বাধীনতা তখনি পূর্ণ হবে, যখন আমার কৃষক-শ্রমিকরা পেট ভরে ভাত খেতে পাড়বে; যখন আমার মা-বোনেরা পরনের কাপড় পাবে, যখন আমার যুবকরা চাকরি বা কাজ পাবে’। মাত্র ৪টি লাইনে বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার একটা দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন, যেমনটা দিয়েছিলেন ৭ই মার্চের ভাষণে আমাদের মহান স্বাধীনতার। একইভাবে স্বাধীনতার পর মাত্র ৯ মাসের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম সংবিধান আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু, যেখানে নাগরিকের ৫টি মৌলিক অধিকার রাষ্ট্রের দ্বারা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছিলেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতা একটি বিজ্ঞানমনস্ক একটা জাতি গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর দূরদর্শিতা দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিই হবে আমাদের অর্থনীতির অন্যতম হাতিয়ার এবং শিক্ষাই হবে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির অন্যতম হাতিয়ার, তাই বিশ্বের সাথে আমাদের টেলিযোগযোগ স্থাপন করতে হবে এবং সহযোগীতার ভিত্তিতে প্রযুক্তির সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর জাতির পিতার স্বপ্ন ও আদর্শের সম্পূর্ণ উল্টো দিকে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়। তাই আজ আমি সকলের প্রতি আহ্বান করতে চাই- বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ এক ও অভিন্ন এই তিনটি ইস্যুতে সকল শ্রেনী-পেশা নির্বিশেষে আমাদের কোন বিতর্ক থাকা উচিৎ নয়।

পলক বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্ব ও ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের অনুপ্রেরণায় এখন আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। যার মূল স্তম্ভ হচ্ছে- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সমাজব্যবস্থা ও স্মার্ট সরকারব্যবস্থা। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে, সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত, ব্যয় সাশ্রয় ও আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা সরকারের প্রতিটা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে চাই এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী স্মার্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে তৈরি করতে চাই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বর্তমানে কয়েক লক্ষাধিক নারী ই-কমার্স উদ্যোক্তা, সাড়ে ৬ লক্ষাধিক ফ্রিল্যান্সার, আইটি খাতে ২০ লক্ষাধিক তরুণের কর্মসংস্থান, কয়েক হাজার আইটি ও আইটিইএস কোম্পানি তৈরি হয়েছে; মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু ও রূপপূর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে গেছে অধিকাংশ সরকারি সেবা।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব জি এস এম জাফরউল্লাহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব জনাব আবু হেনা মোরশেদ জামান, তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের সচিব জনাব মোঃ সামসুল আরেফিন, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব ড. শাহজাহান মাহমুদ, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান জনাব প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক জনাব রণজিৎ কুমার, বাংলালিংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এরিক অস ও টেলিটক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান।

শেয়ার করুন:

Recommended For You