ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার বিকল্প নেই

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার বিকল্প নেই। আমাদের সমাজের হাজারো বৈষম্যের মূলে পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থায় ধনীকে আরো ধনী ও বেপরোয়া বানায়, শেষতক দুর্নীতিবাজে পরিণত করে। অপরদিকে যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা সমাজের বৈষম্য দূর করে। সুদ দেয় গরিব বা অসহায় ব্যক্তিরা, সুদ নেয় ধনীরা। অপরদিকে যাকাত দেয় ধর্নীরা, যাকাত গ্রহণ করে অসহায় গরিবরা। এতে করে সমাজের বৈষম্য দূর হয়। ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এজন্য ইসলামী বা যাকাতভিত্তি অর্থ ব্যবস্থা প্রবর্তণের বিকল্প নেই।

রোবাবর (১৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ একটি মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে যাকাতের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা, সুধী মতবিনিময় ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, দলের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, আলহাজ্ব আব্দুল আউয়াল মজুমদার, ডা. শহিদুল ইসলাম, নুরুজ্জামান সরকার,মাওলানা নজরুল ইসলাম, এইচএম মোস্তফা, আলহাজ্ব শেখ আবু তাহের।

দলের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, পুঁজিবাদী অর্থনীতির ধারক-বাহক বুর্জোয়া গোষ্ঠী নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট করে গরিব ও অসহায় মানুষকে শোষণ করছে। এদের হাত এত বড় সরকারও এদের কাছে অসহায়। এই বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে সর্বত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সরকার ইসলামবিদ্বেষীদের খুশি করার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ধর্মীয় অধিকারও হরণ করেছে। ইসলামবিদ্বেষী শক্তিগুলো দীনের বাতিকে ফুঁৎকার দিয়ে নিভিয়ে দিতে চায়। কিন্তু তারা জানেনা যে বাতি আল্লাহ পাক জ্বালিয়ে রেখেছেন, সেই বাতি নিভানোর শক্তি কারো নেই। সেই বাতি নিভাতে গেলে নিজেদের মুখ পুড়ে ছাঁই হয়। তিনি বলেন, রমজান মাসে রোজাদার নিরীহ নিরাপরাধ ঢাবি ছাত্রদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানও রক্তাক্ত করলো ছাত্রলীগ। ভিনদেশি শক্তি বা ইসলামবিরোধী শক্তিকে খুশি করার জন্য ইফতার মাহফিল বন্ধের পাঁয়তারা বিশ্বের মুসলমানদের ভাবিয়ে তুলেছে। এধরনের কর্মকান্ড সরকারের জন্য সুখকর হবে না।

ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, রমজান মাস সিয়াম সাধনার মাস, তাকওয়ার অর্জনের মাস। সরকার মানুষের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি তোয়াক্কা না করে ইফতারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে দেশের মানুষের সেন্টিমেন্ট এখন সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, দেশে উন্নয়নের নামে লুটপাট চলছে। এই সরকার এখন গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। আর জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির জন্য বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর দায় চাপাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, একটি দেশের নাগরিকদের খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চিকিৎসার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, সরকারের। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আজ সব অধিকার হারা। শেষ পর্যন্ত এ দেশের মানুষ ভোটের অধিকারও হারিয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে। ছিন্নমূল ও ভাসমান মানুষের শিক্ষা এবং তাদের সুখে দুঃখে কাজ করে। ঈদের আনন্দ তাদের সাথে ভাগ করে নেই। সমাজের অসহায়, দারিদ্র, খেটে খাওয়া মানুষের কল্যাণে, অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে কাজ করে। এজন্য ইসলামী আন্দোলনের পাশে থেকে সহযোগিতা, পরামর্শ প্রদানের জন্য সুদীদের প্রতি আহ্বান জানান।

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You