জাবি ধর্ষণকাণ্ড : ছাত্রলীগ নেতাসহ ২ জনের সনদ বাতিল, স্থায়ী বহিষ্কার ৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ সাত জনের শাস্তি স্থায়ী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে অছাত্রদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

গতকাল রোববার (১০ মার্চ) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও সিন্ডিকেটের সচিব আবু হাসান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ দুই জনের সনদ বাতিল ও পাঁচজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আবু হাসান বলেন, মূল অভিযুক্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও তার সাহায্যকারী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মুরাদ হোসেনের সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে বাকি অভিযুক্তদের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বহিরাগত অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ মামুনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বহাল থাকবে।

স্থায়ী বহিষ্কৃতরা হলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকী সাগর, ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহ পরান ও ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. হাসানুজ্জামান এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর। তবে স্থায়ী বহিষ্কৃতদের মধ্যে আরেকজন শিক্ষার্থীর নাম জানা যায়নি। এছাড়া আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হল ত্যাগ না করলে অ্যাকাডেমিক সনদ স্থায়ীভাবে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান রেজিস্ট্রার আবু হাসান।

তিনি বলেন, যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে, তাদের আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে হল ত্যাগ করতে হবে। হল ত্যাগ না করলে তাদের অ্যাকাডেমিক সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হবে। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এর পরদিন ৪ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় ধর্ষণের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। এ ছাড়া অধিকতর তদন্তের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছিল।

শেয়ার করুন:

Recommended For You