ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মুক্ত মঞ্চ তৈরির জন্য কাটা হয়েছে গাছ। রবিবার (০৩ মার্চ) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় তিনটি গাছ কাটা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বটতলার নিজস্ব সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ পুরো বটতলা এলাকা ছায়া দিতো এ গাছগুলো। এতে নানান সময় আড্ডার জন্য এখানে বসে শিক্ষার্থীরা পেতো স্বস্তি। এই অবস্থায় গাছগুলো কেটে প্রশাসনের আগ্রাসনের কারণে নিজস্ব সৌন্দর্য হারিয়েছে বটতলা।
এদিকে নব নির্মিত মুক্ত মঞ্চ থেকে প্রায় ৩০ মিটার দূরত্বে দুইটি একাডেমীক বিল্ডিং রয়েছে। দুইটি একাডেমীক বিল্ডিংয়ে অন্তত এক ডজন বিভাগের ল্যাব ও ক্লাস রুম রয়েছে। প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীদের দাবি, ক্লাস রুমের কাছে মুক্ত মঞ্চ তৈরি হলে আমাদের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করা। অবিলম্বে মুক্ত মঞ্চ অন্যত্রে সরিয়ে নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফা ইসলাম ভাবনা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন গাছগুলো আমাদের সম্পদ। এগুলো সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। যদি খুব প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এই গাছগুলো কাঁটতে হয় তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা নেবার দাবি জানাচ্ছি।’ এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এরকম গাছ কাটা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শরিফ মো. আল-রেজা বলেন, বটতলায় প্রোগ্রাম হলে আমাদের ক্লাস পরীক্ষায় ডিস্টার্ব হয়। তারপর যদি আবার একই এলাকায় মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হয়, সেইক্ষেত্রে আমাদের ক্লাস পরীক্ষায় আরও ডিস্টার্ব হবে। আমাদের দাবি থাকবে জিনিসটা যাতে অন্য জায়গায় করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ ইমন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো গাছগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। আমাদের আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেনো আর একটি গাছেও হাত না দেয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ. কে. এম শরীফ উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে একটি কাজ দিয়েছিল। আমি ওইকাজের চাহিদা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এর বেশি কিছু আমি জানিনা। প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি প্রক্টরের কোন ফাংশন না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।’ এস্টেট অফিসের দায়িত্বরত উপ-রেজিস্ট্রার শামসুজ্জামান জোহা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের অনুমতি নিয়ে গাছগুলো কাটা হয়েছে। এখানে আমার ব্যক্তিগত কোন সিদ্ধান্ত নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার সাথে এ বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।’