কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ মামলার পলাতক দুই আসামিকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প ও র্যাব-১ এর একটি যৌথ আভিযানিক টিম। গ্রেফতার দুইজন হলেন, মেহেদী হাসান(২২) পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দি ভূঞাবাড়ি এলাকার মো. মাসুমের ছেলে ও আতিকুর রহমান ওরফে মাহিন(২২) একই উপজেলার তারাকান্দি আকন্দবাড়ি এলাকার মোখলেছ মিয়ার ছেলে। গ্রেফতার দুইজন ওই অপহরণ ও গণধর্ষণ মামলার ৩ ও ৫নম্বর এজহারভূক্ত আসামি।
শনিবার (০২ মার্চ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানান র্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির। শুক্রবার ১ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোপন সংবাদের বিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গাজীপুর জেলার টঙ্গি উপজেলার টঙ্গি পূর্ব থানার জামাইবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, চলতি বছরের গত ২৭ জানুয়ারি বেলা ১২টার কিছু পরে গণধর্ষণের শিকার ভিকটিম চরতেরটেকিয়া এলাকা থেকে তার বন্ধু সাব্বির(১৮) ও আশরাফ(১৯)কে সাথে নিয়ে ড্রাইভার হুমায়ুন কবির(২১)এর অটোতে করে পাকুন্দিয়া থানাধীন তারাকান্দি এলাকায় ঘুরতে যান। তারাকান্দি বাজারে যাওয়ার পর রাস্তার পাশে অটো দাঁড় করিয়ে সাব্বির ও আশরাফ দোকান থেকে কিছু কিনতে গেলে আসামি মো. কাউসার(২৪), জুবায়েদ হাসান শুভ(১৮), মো: হাসান(২২), হৃদয়(৩২), মাহিন (২২), তোফাজ্জল হোসেন রাজু(২৪) এবং ইয়াছিন(২৫) ভিকটিমকে উত্যক্ত করতে থাকে। ওই সময় সাব্বির ও আশরাফ ভিকটিমকে রক্ষায় এগিয়েেএলে আসামিগণ তাদেরকে অটোতে তুলে জোরপূর্বক পাকুন্দিয়া থানাধীন তারাকান্দি গ্রামের তারাকান্দি ফাজিল মাদরাসা মাঠে নিয়ে গিয়ে সাব্বির, আশরাফ এবং অটোগাড়ীর ড্রাইভার হুমায়ুন কবিরকে মাদ্রাসার মাঠে আটকে রেখে আসামিগণ ভিকটিমকে মাদ্রাসার পাশের জনৈক রানা ভূইয়ার পরিত্যক্ত টিনের ঘরে বিকাল অনুমান ৩টার সময় জোরপূর্বক নিয়ে গিয়ে আসামি হৃদয়, হাসান, মাহিন, কাউছার এবং জুবায়ের হাসান শুভ অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় পালাক্রমে ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ওই সময় ভিকটিমের সাথে থাকা ভিকটিমের বন্ধু সাব্বির ও আশরাফের কাছে আসামিগণ দশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। তখন আশরাফ মুক্তিপণের টাকা সংগ্রহের কথা বলে কৌশলে ওই স্থান থেকে পাকুন্দিয়া থানায় গিয়ে পাকুন্দিয়া থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। পাকুন্দিয়া থানা পুলিশ বিষয়টি অবগত হয়ে তাৎক্ষনিক তারা ঘটনাস্থলে এসে ঘটনাস্থল থেকে আসামি মো. কাউছার, জোবায়ের হাসান শুভ এবং তোফাজ্জল হোসেন রাজুকে গ্রেফতার করে এবং ভিকটিমসহ ভিকটিমের সাথে থাকা ভিকটিমের বন্ধু সাব্বির এবং ড্রাইভার হুমায়ুন কবিরকে উদ্ধার করে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম চিকিৎসা গ্রহণ করে পাকুন্দিয়া থানায় অপহরণ করিয়া মুক্তিপণ দাবি করতঃ ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে আসামিগণ গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। পলাতক আসামিদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং পলাতক আসামিদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতার আসামিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাকুন্দিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।