এক সময়ের অন্যের বাড়িতে খেটে খাওয়া স্বাভাবিক জীবন যাপন করা আব্দুল খালেক এখন একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী। তিন সন্তানের এই জনক দিন কাটাচ্ছে এখন শুধু বিছানায় শুয়ে বসে, অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাচ্ছে তার স্ত্রী মোছাম্মদ মুক্তা বানু। বলছি নীলফামারী সদর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড চেতাশাহ রেলঘুন্টি, কুখাপাড়া এলাকার আমিন আলীর ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল খালেকের কথা।
মোহাম্মদ আব্দুল খালেক এক সময় স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করে , এবং এক সময় দাম্পত্য জীবন শুরু করেন সে, তার দাম্পত্য জীবনে ঘর আলো করে আছে তিন সন্তান। হঠাৎ একদিন নেমে এলো তার পরিবারে অন্ধকারের ছায়া, অন্যের বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে ভেঙ্গে যায় তার কোমর, চুরমার হয়ে যায় তার মেরুদণ্ড। অনেক জায়গায় চিকিৎসা করে ফিরে পায়নি আর আগের মতো স্বাভাবিক জীবন, দাম্পত্য জীবনে জমিয়ে রাখা সব অর্থ শেষ করেও হয়ে উঠতে পারেনি সুস্থ। এখন কষ্টে দিন কাটাচ্ছে আব্দুল খালেক এবং তার পরিবার। অন্যের বাড়িতে কাজ করে আনা অর্থে কোন রকমে চলছে তার পরিবার। দিতে পারছে না তার সন্তানদের ভালো পোশাক, খাওয়াতে পারছে না ভালো কোন খাবার।
এ বিষয়ে আব্দুল খালেকের স্ত্রী মুক্তা বেগম বলেন, আমরা আগে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলাম কিন্তু হঠাৎ একদিন তিনি অন্যের বাড়িতে গাছ কাটতে গেলে গাছ থেকে পড়ে তার কোমর এবং মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যায়, অনেক চিকিৎসা করেও তাকে সুস্থ করে তুলতে পারিনি। এখন উনি শুধু বিছানায় শুয়ে থাকেন, করতে পারেন না হাটা চলা। বিছানায় সবকিছু করেন। আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পাই তাতে এখন আমার সংসার চলছে, বাচ্চাদের ভালো কিছু খাওয়াতে বা ভালো কিছু কিনে দিতে পারছি না, তাই কেউ যদি আমার স্বামীর চিকিৎসার জন্য কিছু আর্থিক সাহায্য দিয়ে সাহায্য করে তাহলে আমার স্বামীর একটু চিকিৎসা করতে পারতাম এবং তিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে। এ কথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এদিকে আব্দুল খালেকের কথা বলায় সমস্যা হওয়ায় তার সাথে কথা বলা যায়নি। তবে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আব্দুল খালেক একজন ভালো ছেলে। সে সবার সাথে মিশত, সবার কথা রাখতো কিন্তু হঠাৎ এমন একটি ঘটনার শিকার হবে আমরা তা কল্পনাও করতে পারি না। সে হাটা চলা করতে পারে না প্রায় ৫ বছর হলো, কেউ তাকে একটি হুউল চেয়ারও দেয়নি বা কেউ তাকে নগদ অর্থ দিয়েও সাহায্য করেনি। এবিষয়ে উক্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের সাথে কথা বলার জন্য চেষ্টা করা হলেও তার সাথে কথা বলা যায়নি।