আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব চায় আওয়ামী লীগ সরকার। তবে কেউ প্রভুত্ব করতে আসতে চাইলে মানব না।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
তিনি বলেন, আমরা বিদেশি বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। আর বন্ধুর পরিবর্তে যারা প্রভুর ভূমিকায় আসতে চায়, সেই প্রভুর দাসত্ব আমরা মানি না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সর্বশেষ সফরেও তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। তারা শেষ কথা যা বলেছে, তাতে বিএনপির আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু নেই। সরতার পতন, ব্যর্থতা, সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা-এসব বিষয়ে তারা কিছু পায়নি। সেজন্য তারা চুপ করে থাকার কৌশল নিয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতাদের মিথ্যাচারের ভাঙা রেকর্ড শুনতে শুনতে কান ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। এখন তাদের গলার জোর একটু কমে গেছে। মুখে বিষটা আরও উগ্রো হয়ে গেছে। তাদের আন্দোলনে ব্যর্থতা, নির্বাচনে না আসার ব্যর্থতা-এখন এই ব্যর্থতাই তাদের বেসামাল ও বেপরোয়া করেছে। তাদের এই নেতিবাচক মানসিকতা সরকারের ওপরে চাপাচ্ছে। যা বাস্তবে আমরা দেখি না।
তিনি আরও বলেন, ষড়যন্ত্রের গন্ধ সব ব্যাপারে বলতে চাই না। এখন বিএনপির কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। কারণ, তারা বলেছিল নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হলে পাঁচদিনও টিকবে না। তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যা চায়, সেই চাওয়াটা পাওয়া হয়নি। তারা শুনতে চেয়েছিল সরকারের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আসবে। ভীসানীতি আরোপ হবে-এমন স্বপ্ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে গেছে। কিন্তু তারা তাদের কথা বলেছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
চাঁদাবাজির কারণে গরুর মাংসের দাম বাড়ছে-এমন অভিযোগের বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, চাঁদাবাজির একটা বিষয় অবশ্যই আছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠিন বক্তব্য রেখেছেন। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ সময় বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ পরিশোধ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের ঋণ খেলাপি হওয়ার রেকর্ড নেই, এবারও হবে না। তবে ঋণ বাড়তে পারে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে যেতে পারে এমন আশঙ্কা আছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দেশের জনগণ প্রমাণ করেছে তারা এত উসকানি, এত আন্দোলন যে বাংলাদেশ উত্তাল সাগর হয়ে যাবে-এসবের পরও তাদের ওই পিকনিক পার্টি সমাবেশে জনগণ প্রলুব্ধ হয়নি, প্ররোচিতও হয়নি। তিনি বলেন, দেশের জনগণ সারা বিশ্বের খবর রাখে। সারা বিশ্বের সব খবর নিয়ে গ্রামে চায়ের দোকানে রীতিমতো গবেষণা হয়। মানুষ বোঝে এখানে সরকারের দোষ নেই। বিশ্বে যে সংকট দ্রব্যমূল্য নিয়ে সে দ্রব্যমূল্য বাংলাদেশের একার সমস্যা নয়। সারা দুনিয়াতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। পৃথিবীর একটা দেশ দেখান, যেখানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক অবস্থায় আছে। তবে আমাদের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা এখনো আছে। আমরা আশা করি সামনের রমজানেও জিনিসপত্র পর্যাপ্ত থাকবে।