লেবাননে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এই হামলায় নয়জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চার শিশু ও চারজন নারী। নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ লেবানন অঞ্চলের এক হাসপাতালের পরিচালক এবং লেবাননের তিনটি নিরাপত্তা সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। এর আগে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলি এক সেনাসদস্য নিহত হয়। হিজবুল্লাহর রকেট হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে। লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্রগোষ্ঠীর ওই হামলায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হন।
আল-সাওয়ানা গ্রামে ইসরায়েলি হামলায় একজন নারী ও তার দুই সন্তান নিহত হয়েছেন বলে দুটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে। আর শহরের হাসপাতালের পরিচালক হাসান ওয়াজনি এবং অন্য তিনটি নিরাপত্তা সূত্রের মতে, নাবাতিহের একটি ভবনে হামলায় আরও দুই শিশু, তিনজন নারী ও একজন পুরুষ নিহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলি সরকারের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, বুধবার সকালে লেবানন থেকে রকেট হামলায় ইসরায়েলের এক নারী সৈন্য মারা গেছে এবং অন্য আটজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মুখপাত্র ইলানা স্টেইন বলেছেন, ‘আমরা বারবার স্পষ্ট করেছি, ইসরায়েল দুটি ফ্রন্টে যুদ্ধে আগ্রহী নয়। তবে উস্কানি দিলে আমরা কঠোর জবাব দেব।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে, হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং তারা তাদের বাড়িতে ফিরতে পারছে না, এটি অসহনীয়। তাদেরকে অবশ্যই দেশে ফিরে শান্তি ও নিরাপত্তায় বসবাস করতে পারতে হবে।’ স্টেইন এবং ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী লেবানন থেকে আন্তঃসীমান্ত রকেট হামলার জবাব দিয়েছে।
ওয়াজনি বলেছেন, ইসরায়েলি হামলার পর চিকিৎসার জন্য আরও সাতজন হাসপাতালে গিয়েছেন। গোষ্ঠী এবং নিরাপত্তা সূত্রে জানা গেছে, পৃথক হামলায় চার হিজবুল্লাহ যোদ্ধাও নিহত হয়েছেন।অবশ্য হিজবুল্লাহ বুধবার কোনো অভিযানের ঘোষণা দেয়নি। এর কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রধান বলেছেন, বুধবার লেবাননের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলার ‘জবাব দেওয়া হবে’।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। চার মাস ধরে চলমান সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬৭ হাজার। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সেই আগ্রাসন শুরুর কয়েক দিন পর থেকেই লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত এলাকায় রকেট ও ড্রোন হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। জবাবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীও পাল্টা হামলা অব্যাহত রেখেছে।
সুত্র : রয়টার্স