পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ২৬৫ আসনের মধ্যে ১৭০টিতে জয় দাবি করেছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। দলটি মজলিস ওয়াহদাত-ই-মুসলিমীন (এমডব্লিউএম) এর সঙ্গে জোট গঠন করতেও প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
শনিবার পাকিস্তানের দ্য নেশন পত্রিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য বলা হয়েছে। যদিও নির্বাচনের ফল এখনও পুরোপুরি ঘোষণা করা হয়নি। তবে শেষ খবর পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০০টি আসনে জয় পেয়েছেন যাদের বেশিরভাগই পিটিআই সমর্থিত। পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গোহর খান অভিযোগ করেছেন, পিটিআইয়ের জয়ী আসনগুলোতে কারচুপি করে পরাজয় দেখানোর প্রচেষ্টা চলছে। প্রতিবাদ জানাতে তিনি আগামীকাল (রোববার) যেসকল কেন্দ্রে ফল ঘোষণা দেরি হয়েছে সেসব কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসারদের অফিসের বাইরে বিক্ষোভ করার জন্য দলীয় কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার সাংবাদিকদেরকে তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত নিশ্চিতভাবে দাবি করছি এই মুহূর্তে পিটিআই জাতীয় পরিষদের ২৬৫টি আসনের মধ্যে ১৭০টি আসন জিতেছে। এর মধ্যে ৯৪টি আসনের জয় ইসিপি ঘোষণা করেছে এবং ফরম-৪৭ (অস্থায়ী ফলাফল) জারি করেছে। গোহর খান আরও বলেন, ইসলামাবাদের তিনটি, সিন্ধুর চারটি ও পাঞ্জাবের বাকি অংশসহ ২২টি আসনে ফর্ম-৪৫ অনুসারে পিটিআই জিতেছিল। কিন্তু আসনগুলো ফল পরিবর্তন করে পরাজয় দেখানো হয়েছে।
ইমরান খানকে অপরাধমূলক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের সমর্থনে একটি রায়ে পিটিআই-এর নির্বাচনী প্রতীকও কেড়ে নিয়েছে ইসিপি। ফলে পিটিআই নেতা ও সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ২৬৫টি আসনের মধ্যে ২৫৫টিতে ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছে ১০০টি আসনে যাদের বেশিরভাগই পিটিআই সমর্থিত। তারপরে পিএমএল-এন ও পিপিপি যথাক্রমে ৭৩টি এবং ৫৪টি আসনে জয় পেয়ে এগিয়ে রয়েছে। ব্যারিস্টার গোহর আলী খান বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আহ্বানে ৮ ফেব্রুয়ারি মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ভোটের অধিকার কাজে লাগিয়েছে। ভোটের পরের দিন দুপুর ২টার মধ্যে ফল ঘোষণা করা ও বিলম্ব হলে কারণ ব্যাখ্যা করা ইসিপির সাংবিধানিক এবং আইনগত দায়িত্ব।
এদিকে, পাঞ্জাব বিধানসভায় পিটিআই খাইবার পাখতুনখোয়ায় ৪৫টির মধ্যে ৩৯টি আসনে জয় দাবি করেছে। এর আগে, সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার বিলম্ব নিয়ে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের সমালোচনার মধ্যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান শনিবার বিজয় ভাষণ দিয়েছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ভাষণে তিনি বলেছেন, নওয়াজ শরিফের ‘লন্ডন পরিকল্পনা’ ভোটের দিনে ভোটারদের ব্যাপক ভোটদানের ফলে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ তিনি দাবি করেছিলেন এই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পাবেন।
তবে নির্বাচন কতটা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পৃথকভাবে সহিংসতা, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অভাব’ এবং ইন্টারনেট বিভ্রাটের বিষয়ে পাকিস্তানের নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।