কুড়িগ্রামে দায়সারাভাবে শুরু হয়েছে বিসিক মেলা। স্থানীয় উদ্যোক্তাদেরকে নিয়ে বিসিক মেলার আয়োজনের কথা বলা হলেও কার্যত মেলার বেশিরভাগ স্টল খালি পড়ে আছে। ফলে বাইরের উদ্যোক্তাদেরকে নিয়ে স্টলগুলো পুরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম শহরের কলেজমোড়স্থ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রয়ারি) আয়োজন করা হয়েছে ১০দিন ব্যাপী এই মেলার। পাশেই আউটার স্টেডিয়ামে বসেছে বাণিজ্যমেলা। ফলে স্বল্পমূল্যের বাণিজ্যমেলাকে ঘিরে এই উদ্যোক্তা মেলা কতটুকু উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পুরণ করবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চত্বর জুড়ে মোট ৫০টি স্টল সাজানো হয়েছে। এরমধ্যে ১৩টিতে উদ্যোক্তারা বসেছেন। বাকীগুলো খালি পড়ে আছে। এই মেলার জন্য বড় ধরণের বরাদ্দ থাকলেও আয়োজকরা যেনতেনভাবে মেলার আয়োজন করেছেন। এতে উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহনের জন্য প্রচার-প্রচরাণার অভাব প্রতিফলিত হয়েছে।
নিলফামারী সদর থেকে কামাল হোসেন নামে এক উদ্যোক্তা মোবাইলে জানান, তিনি ৪ হাজার টাকা ফি দিয়ে ২টি স্টল নিয়েছেন। এরমধ্যে একটি নিজস্ব তৈরী সোয়েটার এবং অন্যটিতে বিভিন্ন ধরণের খেলনা তুলেছেন। একই জেলার সৈয়দপুর থেকে আসা জোৎস্না হস্তশিল্পের কর্ণধার জোৎস্না খাতুন জানান, দুই হাজার টাকা ফি দিয়ে গতকাল স্টল সাজিয়েছি। এখন পর্যন্ত মাত্র একটি কানটুপি বিক্রি করতে পেরেছি। একই জায়গায় দুটি মেলা আয়োজন করায় আমাদের পণ্য সেল করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এছাড়াও কুড়িগ্রামের সারা বুটিকস’র সিসিলিয়া ঢাকী, আজান ফ্যাশন হাউজের সানজিদা নাজনিন ও জেএম হ্যান্ডি ক্রাফট ও রংপুর প্রাইমারী মিশনের মাকসুদা বেগম জানান, অনেক আশা নিয়ে এসেছি। দুদিন হলো এখনো স্টলগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। ভীড়-বাট্টাও তেমন নেই। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের ব্যবসায় লোকসান হবে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু জানান, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্য সম্পর্কে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এই মেলার আয়োজন। জেলায় প্রায় আড়াই থেকে ৩ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্ত রয়েছে। অথচ স্টলগুলো ফাঁকা দেখছি। বাইরের উদ্যোক্তাও আনা হয়েছে। প্রচারণা না থাকার ফলে দায়সারাভাবে চালানো হচ্ছে বিসিক মেলাটি। কতৃপক্ষকে আরো সচেতন হওয়া দরকার।
কুড়িগ্রাম বিসিক’র উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ জুনায়েদ জানান, আমরা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের আহবান জানিয়েছি। অন্য জেলা থেকেও কিছু উদ্যোক্তা নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি ৪০ থেকে ৪৫টি স্টল পুরণ হবে। ইতিমধ্যে ২৩জন রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিয়েছেন। যা সরকারি কোষাগারে যাবে। এই মেলার জন্য ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার বাজেট রয়েছে। আমরা অংশগ্রহনকারীদেরকে সার্টিফিকেট দিবো।