অবৈধ ইটভাটায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার সংবাদ প্রচার করায় দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানহানীর মামলা করা হয়েছে। এ মামলা দায়েরের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় ওঠে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইটভাটার ম্যানেজার নুর উদ্দিন বয়াতি বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। ওই দুই সাংবাদিক হলেন, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার স্টাফ রিপোটার আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন সিকদার ও দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ হোসাইন আলী কাজী। এ ঘটনার জেরে ইটভাটার ম্যানেজারের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন আমতলী উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ। এ মিথ্যা ও হয়রানী মুলক মামলা প্রত্যাহার না করলে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলায় ২০১৩ সালে চিহ্নিত রাজাকার পুত্র নুরুল ইসলামের স্ত্রী জাহানারা ইসলাম এনবিএম নামের একটি ইটভাটা নির্মাণ করেন। ওই ইটভাটা সংলগ্ন পশ্চিম পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ওই বাঁধের কান্টি সাইটের মাটি কেটে ভাটার ম্যানেজার নুর উদ্দিন বয়াতি ও তার লোকজন ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রাকৃতিক জ্বলোচ্ছাসে বাঁধ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করলে ওই ইউনিয়নের ফসলী জমি, প্রাণীকুল ও অন্তত ৩০ হাজার মানুষ দুর্যোগের ঝুঁকিতে পড়বে। এছাড়াও ওই ইটভাটা সংলগ্ন তিনপাশে গ্রাম ও তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই ইটভাটার ধোয়ায় পরিবেশ চরম আকারে বিঘ্নিত হচ্ছে। ইটভাটার মালিক জাহানারা ইসলাম, ম্যানেজার প্রভাবশালী নুর উদ্দিন বয়াতি ও তার লোকজনের কারনে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। এর বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
গত ৩১ জানুয়ারী ওই ইটভাটা নিয়ে দৈনিক আজকের পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় স্বচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে তার অবৈধ ইটভাটা রক্ষায় উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে ম্যানেজার নুর উদ্দিন বয়াতি ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সোমবার আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হয়রানীমূলক মিথ্যা মানহানী মামলা দায়ের করে। এ মিথ্যা ও হয়রানীমুলক মামলা দায়েরের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
এদিকে হয়রানীমুলক মিথ্যা মামলা দায়েরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জিএম ওসমানী হাসান, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি মজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম শাহাজাদা আকন, কাউন্সিলর পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জিএম মুছা, বরগুনা প্রেসক্লাব সভাপতি অ্যাড. মোস্তফা কাদের, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাফর হাওলাদার, বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি ইমরান টিটু, সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন ফসল, বরগুনা রিপোর্টাস গিল্ড সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর রশিদ রিংকু, বরগুনা রিপোর্টাস ক্লাব সভাপতি তরিকুল ইসলাম রতন, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান মিরাজ, বে-সরকারী স্যাটেলাইট চ্যানেল নিউজ টুয়েন্টিফোর বরগুনা প্রতিনিধি সুমন সিকদার, দৈনিক প্রথম আলো বরগুনা প্রতিনিধি মোহাম্মদ রফিক, কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগ সভাপতি নুসরাত জাহান লিমু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল মতিন খাঁন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সবুজ, আমতলী প্রেসক্লাব সভাপতি অ্যাড. শাহাবুদ্দিন পান্না, সাবেক সভাপতি একেএম খায়রুল বাশার বুলবুল, রেজাউল করিম বাদল, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুহু-উল আলম নবীন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নাশির মাহমুদ, মনিরুজ্জামান সুমন আকন, আমতলী স্বর্ণকার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পরিতোষ কর্মকার, তালতলী প্রেসক্লাব সভাপতি খায়রুল ইসলাম আকাশ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, বেতাগী প্রেসক্লাব সভাপতি ম্বপন ঢালী, তালতলী সাংবাদিক ফোরাম সভাপতি নাশির উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক হাইরাজ মাঝি প্রমুখ।