ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত


ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, নামমাত্র সংসদ ভেঙে দিতে হবে। জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

শনিবার বিকেলে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে একতরফা ডামি নির্বাচনের সংসদ এবং ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতাকে বৈধতাদানকারী বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, গণবিচ্ছিন্ন হওয়া ডামি নির্বাচনে জনগণ এমনকি আওয়ামী লীগের লোকজনও ভোট দেয়নি। সরকারের একতরফা ও পাতানো নির্বাচন জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। এই সংসদ অবৈধ সংসদ। এই সরকার অবৈধ সরকার। অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে জনগণ বাধ্য করবে। এমন আন্দোলনের ঢেউ তোলা হবে, সরকার পালাবারও সুযোগও পাবে না।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, আলহাজ আলতাফ হোসেন, ডা. শহিদুল ইসলাম, মুফতি মানসুর আহমদ সাকী, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, ফজলুল হক মৃধা, মুফতি নিজামুদ্দিন, মাওলানা আলআমিন সোহাগ, মুফতি হাফিজুল হক ফাইয়াজ, আব্দুর রহমান, এম জসিম খাঁ কেএম নাসির উদ্দিন।

মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামিতা শুধু ইসলামেই নয়, অন্যান্য ধর্মেও বৈধ নয়। খ্রিস্টধর্মে বলা হয়েছে, সমকামিরা ঈশ্বরের গজবপ্রাপ্ত। হিন্দুধর্মে বলা হয়েছে সমকামি মহিলা হলে আগুল কেটে বা মাথা ন্যাড়া করে দেয়া এবং ২০০ রুপি জরিমানা করা। সমকামি পুরুষ হলে পানিতে ডুবিয়ে মারা। বাংলাদেশে সংবিধানে সমকামিদের ১০ বছর কারাদন্ডের বিধান এমনকি মৃত্যুদন্ডর বিধানও আছে। ইসলামে সমকামিতা হারাম। কেননা কোন পশুও সমলিঙ্গের কোন পশুর সাথে কাম-বাসনায় লিপ্ত হয় না। কাজেই ট্রান্সজেন্ডারকে প্রমোট করার কোন সুযোগ নেই। মহাসচিব বলেন, বঙ্গবন্ধু বেচে থাকলে শেখ হাসিনার ডানে-বামে যারা আছে তাদেরকে দুশমন আখ্যা দিয়ে দেশবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদেরকে তাড়িয়ে দিতে বলতেন। তিনি আরো বলেন, ট্রান্সজেন্ডার হলো সমকামিতার অপর নাম। ট্রান্সজেন্ডারকে যারা পছন্দ করে তারা দেশের দুশমন, ইসলামের দুশমন ও মানবতার দুশমন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দুশমনদের বিরুদ্ধে জনতার আন্দোলন শুরু হয়েছে, এ আন্দোলন চলবে।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে এ অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে, ডামি সরকারের বিরুদ্ধে ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছি। এই পার্লামেন্ট অবৈধ পার্লামেন্ট। এ পার্লামেন্ট এক ব্যক্তির পার্লামেন্ট। এ পার্লামেন্ট শেখ হাসিনার পার্লামেন্ট। এক ব্যক্তি যা চায়, তাই করতে হবে এবং তাই করছে। বিদেশী প্রভুদের মনোরঞ্জনের জন্য তারা দেশের বিরুদ্ধে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতার সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, এ সরকারকে দ্রুত ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হবে। ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামিতাকে প্রমোট করার চেষ্টা করা হলে জনগণ তা রুখে দিবে। আমরা সমকামিতাকে প্রতিষ্ঠিত হতে দেবো না। ভারতের একটি কোচিং সেন্টারের ওয়েবসাইট থেকে নেয়া তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। জাতি হিসেবে আমরা চরম লজ্জিত। ট্রান্সজেন্ডার যাদের ভালো লাগে, তারা নিষিদ্ধ পল্লীতে যেতে পারেন। তবুও আমাদের দেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ধ্বংস হতে দেবো না।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দলের কোন মন্ত্রীদের লজ্জা নেই। লজ্জা, লজ্জা, লজ্জা। এ লজ্জা সরকারের, মন্ত্রীদের না হলেও দেশের জনগণের লজ্জা অনুভুত হয়। জাতি হিসেবে আমরা আজ চরমভাবে লজ্জিত। একটি ভুয়া ও ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদও ডামি সংসদ। এই সরকারের সকল মন্ত্রী এমপিও ডামি হিসেবে পরিচিত। এই শিক্ষা কারিকুলাম ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করুন। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংস হওয়ার কোন সিলেবাস এদেশে চলতে দেয়া হবে না। পরে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট, পল্টন মোড়, বিজয়নগরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You