ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেছেন, প্রহসনের একতরফা ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার দেশকে স্থায়ী সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে। দেশে রিজার্ভ সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করছে। দুর্নীতির কারণে দেশে জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শুক্রবার বাদ জুমা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা জেলা দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানীর কেরাণীগঞ্জের কালিগঞ্জ জোড়া ব্রিজ প্রাঙ্গণে একতরফা ডামি নির্বাচনের সংসদ এবং ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতাকে বৈধতাদানকারী বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ উত্তর সমাবেশে প্রদান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদকে বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকারসহ সকল অধিকার হরণ করেছে সরকার। সাংবিধানিকভাবে অবৈধ নির্বাচন ও সরকারের কার্যভার গ্রহণের মাধ্যমে দেশকে সংকটের মধ্যে ফেলা হয়েছে। ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পরে ৩০ জানুয়ারি যে ডামি সংসদ অধিবেশন বসেছে- তা বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকারসহ সকল অধিকার হরণ করার সংসদ। ডামি নির্বাচন ও ডামি সংসদের প্রতিবাদে যখন বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদ মিছিলে হামলা করে ন্রাক্কারজনক অধ্যায় সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, সরকারের দুর্নীতি-লুটপাটে ব্যাংকগুলো খালি, নিঃস্ব করে ফেলা হয়েছে। সংকট উত্তরণের জন্য এখন টাকা ছাপিয়ে ব্যাংকে সরবরাহ করা হচ্ছে, যা নতুন করে অবধারিতভাবেই লুটের আয়োজন হবে। অর্থনৈতিক পরিস্থিত ভেঙে পড়ার ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের ভেতরে থাকা সিন্ডিকেটের দাপটে নিত্যপণ্য ও খাদ্য সামগ্রীর মূল্য মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর দাম ইতিমধ্যেই বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়েছে।
সংগঠনের ঢাকা জেলা দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী হাজী শাহীন আহমাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ হানিফ মেম্বার, আলহাজ্ব সুলতান আহমদ খান, মাওলানা ইলিয়াস হোসাইন, মাওলানা বিল্লাল হোসেন, আলহাজ্ব শামীম খান, মুহাম্মদ শাহীন আহমদ খান, মাওলানা জালাল হোসাইন চাঁদপুরী, মুফতী মিরাজুল ইসলাম মুঈন, এইচএম ইবরাহীম। সমাবেশ চলাকালে পুলিশ সমাবেশে বাধা দেয়। এ সময় জনতার উত্তেজনা ছড়িয়ে পরলে পুলিশ শান্ত হয়।
কাইয়ূম বলেন, ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামীতা বৈধতার চক্রান্ত রুখে দিতে হবে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিমা সমকামীতার এজেন্সী নিয়েছে। এজন্য একজন শিক্ষাক প্রতিবাদ করায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করেছে। শিক্ষা কারিকুলাম সংশোধন করতে হবে। ৯২ ভাগ মানুষের চিন্তার আলোকে নতুনভাবে কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, এই শিক্ষা ব্যবস্থার বড় অসারতা হলো- শিক্ষার্থীদের ডিভাইস-মুখী করা, নম্বরভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতি উঠিয়ে দেওয়া, পাবলিক পরীক্ষায় ধর্মশিক্ষা বাদ দেওয়া, ৯ম শ্রেণীতে বিভাগ উঠিয়ে দেওয়া, নাচ- গান কে প্রমোট করা, কৌশলে ইসলাম ধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করা। মিডিয়া প্রকাশ, গতকালও কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন স্কুলগুলোতে ইসলামশিক্ষা বইয়ের ১২-২৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত হিন্দুদের দেব-দেবীর ছবি ছেপে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করা হয়েছে। মেহেরপুর জেলার স্কুলগুলোতে বিতরণকৃত ইসলাম শিক্ষা বইয়ের প্রচ্ছদে হিন্দুদের দেবীর ছবি। অভিভাবকদের প্রতিবাদের মুখে বইগুলো ফেরত নিয়েছে। একটি স্কুলের ৫ শিক্ষক। আর ৫জনই হিন্দু শিক্ষক। এই হিন্দু শিক্ষক দিয়েই ইসলাম শিক্ষা বইয়ের পাঠদান করানো হয়। এভাবে ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।
সভাপতির বক্তব্যে হাফেজ মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বলেন, আমাদের সন্তানদেরকে শিক্ষার নামে কুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে দিতে পারি না। তিনি শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তন করে মুসলমানের চিন্তা চেতনার আলোকে নতুন করে শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নের দাবি জানান। পরে একটি মিছিল বের হয়ে কালিগঞ্জ আগানগর, কদমতলী বাসস্ট্যান্ডে এসে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।