অবসরের পরও তাঁরা মূল পদে 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মুল তিন পদে আছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তা। বর্তমান উপাচার্য (ভিসি) ড. শিরীণ আখতার, উপ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি) অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের প্রধান রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদের নিয়মিত চাকরির মেয়াদ শেষ। 
একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলছেন, অবসরপ্রাপ্তদের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা কম থাকে! এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা পর্যায়ে অনিয়ম-বিতর্ক হওয়ার শঙ্কা থাকে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক প্রতিবেদক -কে বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত হলে জবাবদিহি করতে হয় না। তাই তাঁরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তাঁদের যদি নিয়মিত চাকরির মেয়াদ থাকত; পেনশন বা পাওনা আদায়ের বিষয় থাকত, তাহলে এতটা বেপরোয়াগতিতে দুর্নীতি-অনিয়ম চলত না বিশ্ববিদ্যালয়ে।’
জানা যায়, নিয়মিত চাকরির বয়স পূর্তিতে ২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল অবসর গ্রহণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার। তবে উপাচার্যের নিয়োগপত্রে নির্ধারিত কোনো মেয়াদ না থাকায় অবসরের পরও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ভিন্ন ঘটনা ঘটেছে উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দের ক্ষেত্রে। ২০২১ সালের ৫ মে উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ পান তিনি। নিয়োগের কয়েক মাস পর চাকরি থেকে অবসরে যান। তাঁর নিয়োগপত্রে চার বছর মেয়াদ উল্লেখ ছিল। এখনো মেয়াদ থাকায় তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদে থাকা কে এম নুর আহমদ চাকরি থেকে অবসরে যান ২০২০ সালের ৩০ জুন। পরবর্তী সময়ে একজন শিক্ষককে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মুখে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেজিস্ট্রার পদে আবার নিয়োগ পান কে এম নুর আহমদ। ওই সময় উপাচার্য বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিলেন, তিন মাসের মধ্যে পূর্ণকালীন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে সেটি এখনো কার্যকর হয়নি। সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতারকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী প্রতিবেদক কে বলেন, ‘ওই পদগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে অবসরপ্রাপ্তদের রাখা সমীচিন নয়।’ তিনি বলেন, ‘নিয়মিত চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তাঁদের ন্যূনতম দায়িত্ববোধ থাকে না। কারণ তাঁরা তাঁদের পাওনা এরই মধ্যে বুঝে নেন। সরকার যাঁদের নিয়োগ দিচ্ছে, তাঁদের যোগ্যতা, দক্ষতা, বয়সসীমা ও সততা যদি যাচাই করা না হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ে। এগুলো সরকারের নজরে আসা উচিত।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ও চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘এটা শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নয়, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনটা আছে। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’ তবে চট্টগ্রামের সচেতন মহলরা এই ব্যাপারে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী চট্টগ্রামের নেতা হিসাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’র এইসব সমস্যা সমাধানে উনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
শেয়ার করুন:

Recommended For You