রবিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর ২:৩০টায়, বনানী মডেল স্কুল মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে দেশব্যাপী অসহায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এসময় আটশত অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। উক্ত শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন ও সভাপতিত্ব করেন- শেখ ফজলে শামস্ পরশ-চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-আমিনুল ইসলাম আমিন-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
উদ্বোধক ও সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ গণমানুষের সংগঠন। আমাদের রাজনীতি আপনাদের জন্য। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ শুধু ভোটের সময় আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসে না, ভোটের পরেও আমরা আপনাদের কাছে ছুটে আসি। আমাদেরকে আপনারা সর্বদা আপনাদের কাছে পাবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের সকল রাজনৈতিক কর্মসূচি আপনাদেরকে কেন্দ্র করে। আপনাদের মৌলিক চাহিদাঃ অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য রক্ষা করা আমাদের রাজনীতি করার প্রধান লক্ষ্য। এটা বঙ্গবন্ধুকন্যার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা যে আপনাদেরকে আর কোনদিন ভাত-কাপড়ের জন্য কষ্ট করতে হবে না। তবে আমরা বুঝি, আপনাদের কিছু কষ্ট হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল। সারা বিশ্বেই বেড়ে গেছে। বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম না। বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ এই দ্রব্যমূল্য আপনাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা। সেই উদ্দেশ্যে আপনারা দেখেছেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে সবচেয়ে প্রথমে দ্রব্যমূল্য কমানোর অঙ্গিকার করা হয়েছে। জনগণের কল্যাণে গণমানুষের সংগঠন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবনায় সাধারণ জনগণই সর্বদা প্রাধান্য পায়। এছাড়া আমরা ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখেছি, এদেশে যখনই আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল তখনই দেশের উন্নয়ন হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
তিনি আরও বলেন-একটা স্মার্ট বাংলাদেশ থিমে, “উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান” স্লোগানে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। তার মধ্যে কিছু বিষয় আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবোঃ (১) দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া (২) কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা (৩) নি¤œ আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা। আওয়ামী লীগ সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনাদের জীবনমান উন্নত করা। সেই লক্ষ্যেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে; আপনাদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যার উপর আস্থা রাখতে হবে। অচিরেই আমরা এই সংকট সমাধান করবো। তিনি বলেন-আপনারা যদি ঠিক ১৫ বছর আগের চিত্রে ফিরে যান, আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে, কি দুরবস্থা ছিল আমাদের সামগ্রিক জীবনে। মানুষের ভাত এবং কাপড়ের সমস্যাতেই সাধারণ মানুষ জর্জরিত থাকত। গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং সারের জন্য মানুষের উপর গুলি চালানো হয়েছিল বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে। চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি লেগেই ছিল। মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা ছিল না, ছিল না মানুষের অধিকার। আসলে বিএনপি-জামাত সরকার ছিল সমাজের উচ্চ শ্রেণি দ্বারা লালিত, উচ্চ শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করার সরকার। গরিব-দুঃখী মানুষ নিয়ে তাদের কোনদিনই কোন মাথা ব্যাথা ছিল না। তারা রাজনীতি করে নিজেদের শ্রেণি স্বার্থ হাসিল করার জন্য, আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে আপনাদের মঙ্গলের জন্য, কর্মজীবী খেটে-খাওয়া মানুষের জবীবনের মান উন্নয়নের জন্য। বিএনপি জানে, তাদের জন্য মানুষের শুধু মাত্র ঘৃণাই রয়েছে; মানুষ তাদের বিশ্বাস করে না। তাই তারা নির্বাচনে যেতে ভয় পেয়েছে, কারণ তারা জানে যে এই অপরাধী বিএনপিকে মানুষ কোনদিনও ভোট দিবে না। সেই অপরাধবোধ থেকে মানুষের সামনে ভোট চাইতে যেতে ভয় পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। তিনি আরও বলেন-বর্তমান যুবলীগের অন্যতম লক্ষ্য রাষ্ট্রের মানবিক ধারাকে গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এবং গণমানুষের সুখে-দুঃখে সাথে থাকা। এ লক্ষ্যে যুবলীগ ইতোমধ্যে বেশ কিছু মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে যার একটি সামান্য প্রয়াস আজকের এই দেশব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান। যুবলীগের সকল নেতা-কর্মীরা মানুষের পাশে থাকবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। প্রতিটি মানুষের যেন জীবনের উন্নতি হয়, আপনাদের প্রতিটি ছেলে-মেয়ে লেখা-পড়া শিখে মানুষ হয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, উন্নত জীবন পায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। একটা ন্যায় পরায়ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্ম গণমানুষের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে, এটা আমাদের প্রত্যাশা। এভাবেই বাংলার আপামর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটা নববিপ্লবের সূচনা করবে আমাদের প্রগতিশীল যুবসমাজ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন-আমরা কথায় বিশ্বাস করি না; আমরা কাজে বিশ্বাস করি। কাজে বিশ্বাস করি বলেই আমাদের যুবলীগের নেতা-কর্মীরা, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগের নেতা-কর্মীরা করোনার সময় সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। নিজেদের জীবন বাজি রেখে তাদের সর্বোস্ব দিয়ে এদেশের মানুষের সহায়তা করেছিল। তিনি আরও বলেন-যারা বার বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, মানুষের দুর্দিনে তাদের পাশে থাকে না, তারাও একদিন বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে। তিনি বলেন-আমরা বাংলাদেশকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যেখানে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ শীতবস্ত্র বিতরণ বা ত্রাণ দেওয়ার লোক পাবে না, প্রতিটি মানুষ শিক্ষা-দীক্ষায় স্বয়ংসম্পন্ন হবে। কোন শিক্ষিত মানুষ বেকার থাকবে না, অলস বসে থাকবে না, মানুষ কাজ করে খাবে, সবারই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ হাবিবুর রহমান পবন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, মোঃ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, মোঃ জহির উদ্দিন খসরু, মোঃ সোহেল পারভেজ, মশিউর রহমান চপল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মোঃ হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোঃ সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফজলে রাব্বী স্মরণ, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সামসুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।