আগামীকাল রোববার প্রহসনের নির্বাচনে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান এবং সর্বাত্মকভাবে ভোট বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার নির্বাচন থেকে সংঘত কারণেই দেশের জনগণকে বিরত থাকতে হবে। যেখানে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ্যে জনসভায় বলেন, ‘ভারত আছে তো আমরা আছি’ আরেক প্রার্থী বলেছেন, ‘আমি শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রার্থী’ এধরণের বক্তব্যের পর যখন কোন প্রতিবাদ করা হয় না, তাহলে সহজেই বুঝা যায় এ বক্তব্য খোদ আওয়ামী লীগের বক্তব্য। ভারত আছে তো আমরা আছি এবং ভারতের প্রাথী বলার পর কী বুঝা যায় দেশ এখন আর আমাদের হাতে নেই, পুরোপুরি ভারতের কব্জায়। কাজেই ৭ জানুয়ারী ভোট বর্জন করে দেশ ও দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের এত সব তাণ্ডব এবং মানুষকে জোর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটকেন্দ্রে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও আমরা বলতে পারি, ১০ থেকে ১২ শতাংশের বেশি লোক ভোট কেন্দ্রে যাবে না।
আজ শনিবার বিকেলে বরিশালের চরমোনাই ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, বরিশাল জেলা ও মহানগর এবং চরমোনাই ইউনিয়ন শাখা নেতৃবৃন্দ। এতে হাজার হাজার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার ২০১৪ সালে করলো একতরফা প্রহসনের নির্বাচন, ২০১৮ সালে করলো রাতের ভোট আর ২০২৪ সালে এসে করছে ডামি নির্বাচন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত ৫ দফা দাবি মেনে নিতে আহ্বান জানান। *৭ জানুয়ারী একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করতে হবে। * বিদ্যমান জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। * নিবন্ধিত এবং আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে, জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। * বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দিতে হবে এবং জাতীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পূণঃতফসিল ঘোষণা করবে। * রাজনৈতিক কারণে বিরোধীদলের কারাবন্দী সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলার সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ইউনিয়ন শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল হামিদের বাসায় গভীর রাতে পুলিশের তল্লাশির নামে হয়রানী ও পরিবারকে নাজেহালের বন্ধ এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানী বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, সরকার যে পথে হাঁটছে তা দেশ, জাতি ও মানবতার জন্য কল্যাণকর নয়। সে পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করুন।
আগামিকাল অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে কোনোভাবেই ভোট বলা যাবে না। কারণ কোন দল সরকার গঠন করবে, কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, সব ম্পষ্ট। কোন আসনে কে বিজয় হবেন, তার তথ্যও স্পষ্ট। এ জন্য এটাকে ভোট বলার সুযোগ নেই। এ কারণে যে এই ভোটে কাউকে নির্বাচিত করার বা কাউকে হারিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবকিছু আগে থেকে নির্ধারিত হয়ে আছে। এবারের ভোটে নৌকাকে বেছে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। নৌকা, নয়তো নৌকার স্বতন্ত্র প্রার্থী বা নৌকা সমর্থিত জাতীয় পার্টি অথবা আওয়ামী লীগের জোটভুক্ত কোনো প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে। দিন শেষে ভোট এক জায়গাতেই যাবে। কাজেই এটাকে নির্বাচন বলার কোনো কারণ দেখি না। ৭ জানুয়ারি যা হচ্ছে, তা হলো নিজেদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি করে ক্ষমতা নবায়ন করে নেওয়ার নির্বাচন।