ব্রহ্মপুত্রে পানি বৃদ্ধি, ভাঙনে বিলীন ১৫ বসতভিটা

উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েকদিনের ভারীবর্ষণে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়তে শুরু করেছে। এ কারণে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। গত এক সপ্তাহে বিলীন হয়েছে ১৫ বসতভিটা। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক পরিবার। এছাড়াও হুমকির মুখে পড়েছে আবাদি জমি, বাজার, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন ঠেকানাের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।

সােমবার বিকেলে সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উজানের ঢলে আর কয়েকদিন ভারীবর্ষণে ব্রহ্মপুত্র পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। ভাঙনে বিলীন হয়েছে উপজেলার কােদালকাটি ইউনিয়নের সাজাই বাজারপাড়ায় ৬টি ও পাইকান্টারী এলাকায় ৯টি বসতভিটা। এছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক পরিবার। চােখের সামনেই বিলীন হচ্ছে তাদের বসতভিটা। বুক ফাটা আর্তনাদ নিয়ে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছেন পরিবারের লােকজন। এদের মধ্যে অনেকে তাদের ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র সরিয়ে নিয়েছেন। ঠাঁই নিয়েছেন অন্যের ভিটায়।

তবে এলাকাবাসীর অভিযােগ, এসব এলাকায় নামমাত্র জিও ব্যাগ ফেলে দায় মুক্ত হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

ভাঙনের শিকার হয়েছেন কােদালকাটি ইউনিয়নের সাজাই বাজারপাড়া এলাকার ওহাব আলী, আমজাদ হােসেন, আবু সাইদ, মানিক মিয়া, আব্দুল ছালাম, সাহেদ আলী ও পাইকান্টারী এলাকার নজর ভানু, জাহানারা বেগম, আব্দুল লতিফ, রফিকুল ইসলাম, গােলাপ উদ্দীন, মাইদুল ইসলাম, ছাবিয়া খাতুন, রফিকুল ইসলাম, সাইরুদ্দী।

এরা জানান, প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়ার সাথে সাথে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। এতে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে। গত এক সপ্তাহে তাদের ১৫টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তাদের চােখর সামনেই এসব বসতভিটা বিলীন হয়েছে। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না তাদের। বসতভিটা হারিয়ে এখন নিঃস্ব তারা।

কােদালকাটি ইউনিয়নের সাজাই উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমানের দাবি, সাজাই বাজারপাড়া ও পাইকান্টারী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে অনেকে ঠাঁই নিয়েছেন অন্যের ভিটায়। ভাঙন দ্রুত রােধ করতে না পারলে নিঃস্ব হয়ে পড়বেন অনেক পরিবার।

কােদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য নুরুল আমিন বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এত ভিটমাটি হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। এ নিয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বাের্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী ও রংপুর বিভাগীয় প্রকৌশলীকে জানানাে হয়েছে।

বিষয়টি জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বাের্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে আর কয়েকদিনের ভারীবর্ষণে ব্রহ্মপুত্র পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে কােদালকাটি ইউনিয়নের তিন কিলামিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাত জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে পাঁচ কিলামিটার এলাকায়।

ডব্লিউজি/এমএইচএস

Recommended For You