হারাম পয়সা জীবনে খাইনি: ওয়াসার এমডি

উচ্চ আদালত তদন্তের আদেশ দেওয়ার পরদিন সাংবাদিকদের সামনে এলেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান; বললেন, যুক্তরাষ্ট্রে তার ১৪টি বাড়ির যে খবর পত্রিকায় বেরিয়েছে, সেটা ‘সর্বৈব মিথ্যা’। খবর বিডি নিউজ। “যে ১৪টি বাড়ির কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে পাঁচটি বাড়িতে আমার পরিবার সেখানে বিভিন্ন সময় ভাড়া থেকেছেন। আর একটি বাড়ি আমার স্ত্রীর নামে। আমি, আমার স্ত্রী, সন্তান সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।”

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত নিয়ে ওয়াসার এমডির ভাষ্য, “ঢাকা ওয়াসার ভালো কাজ দেখে যাদের ক্ষতি হয়, তারাই এমন অভিযোগ করেন। আমি জীবনে হারাম পয়সা খাইনি…। খাবো না। ঢাকা ওয়াসার এমডি পদের চাকরি ছেড়ে দিতে চেয়েছি বহুবার। আমাকে অনুরোধ করে রাখা হয়েছে…।” মঙ্গলবার কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনে সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন দুদকের তদন্তের মুখে থাকা তাকসিম এ খান, যিনি ওয়াসার এমডি পদে আছেন ১৪ বছর ধরে। ব্যাপক সমালোচনা থাকলেও দফায় দফায় তার মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।

দুর্নীতি দমন কমিশন গতবছরই তাকসিম এ খানসহ ওয়াসার কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের’ অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটও (বিএফআইইউ) গত ২৫ অগাস্ট তাকসিম এ খানের সব ধরনের ব্যাংক হিসাব তলব করে চিঠি দেয়।

এর মধ্যেই দৈনিক সমকালে গত সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যার শিরোনাম ছিল ‘ওয়াসার তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এ নির্দেশ দিয়েছে। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রতিবেদনটি হাই কোর্টের নজরে আনলে…বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ সোমবার তদন্তের আদেশ দেয়। তাকসিম যুক্তরাষ্ট্রে দুর্নীতি করে বাড়ি করেছেন কি না, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয় ওই আদেশে।

তাকসিম এ খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তার স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি চাকরি করেন। ১৯৯৫ সাল থেকে তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। বাড়ি ও অর্থনৈতিক লেনদেন নিয়ে আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে বলে যে খবর গণমাধ্যমে এসেছে, সেটা ‘স্টান্টবাজি’।

এ বিষয়ে তাসকিমের ভাষ্য, “একটা বিল্ডিংয়ে ১০-১৫টা অ্যাপার্টমেন্ট থাকে। সে অ্যাপার্টমেন্টগুলার বর্তমান বাজার দর কত সেটাও আপনারা ওয়েবসাইট থেকে পাবেন। ১০২টা বেডরুমওয়ালা কোন বাসা হয় না, আবার ১০২টা বাথরুমওয়ালা কোন বাসা হয় না। যেগুলা হয়, সেগুলা প্রেসেডিয়েনশিয়াল… যেগুলা আমাদের আলোচনার মধ্যেও নাই। সাধারণত আমেরিকায় এমন কোনো বাসা থাকে না। অতএব এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত, কাজেই এটার কোনো ভিত্তি নেই।”

ডব্লিউজি/এআর

শেয়ার করুন:

Recommended For You