দেশে প্রথম মরণোত্তর দানের কিডনি প্রতিস্থাপন

বিএসএমএমইউয়ের রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল ওই হাসপাতালের আইসিইউতে ২০ বছর বয়সী এক বেন ডেথ তরুণীর দুটি কিডনি অপসারণ করেন। বুধবার মাঝরাতেই কিডনি দুটি অন্য দুজনের শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। একটি কিডনি দেওয়া হয়েছে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ৩৪ বছর বয়সী এক নারীকে। অপর কিডনি পান জাতীয় কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৭ বছর বয়সী এক নারী।

আর তাতেই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘ব্রেন ডেথ’ কোনো মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপিত হলো দুজন কিডনি রোগীর শরীরে। প্রতিস্থাপন করা দুজনই ভালো আছেন বলে জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ। কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট পদ্ধতিতে। এ পদ্ধতিতে ব্রেন ডেথ রোগীর কিডনি অন্য রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।

ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, মানুষের মস্তিষ্ক মৃত হয়ে গেলেও শরীরের অন্যান্য অঙ্গ পুনরায় ব্যবহার করা যায়। আগেও কয়েকটি ‘ক্যাডাভেরিক ডেথ’ পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু সেগুলো থেকে অন্য প্রতিস্থাপন করা যায়নি। তবে এবার ২০ বছর বয়সী তরুণী সারা ইসলামের কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হলো।

তিনি আরও বলেন, রোগীর মা সম্মতি দেওয়ার পর চিকিৎসকরা প্রস্তুতি শুরু করেন। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ইচ্ছুক পাঁচজন রোগীকে বাছাই করা হয়। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় সারা ইসলামকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রাত ৯টায় দুজনের শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন তারা। আমরা রাত সাড়ে ১০টার সময় সারা ইসলামের শরীরে থেকে কিডনি অপসারণ শুরু করি। জটিল অপারেশন ছিল, দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় কিডনি বের করে আনি। কিডনি বের করে আনার পর তা বিশেষ উপায়ে পরিষ্কার করতে আরও ৩০ মিনিটের মতো লাগে। কিডনি পরিষ্কার করে একটি রাখা হয় বিএসএমএমইউতে, আরেকটি পাঠিয়ে দেওয়া হয় কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে। রাত ১টার দিকে আমরা বিএসএমইউর রোগীর শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু করি। এটি শেষ হয় ভোর সোয়া ৪টায়। কিডনি ফাউন্ডেশনের অপারেশন শেষ হয় ভোর ৫টায়।

 

 

শেয়ার করুন:

Recommended For You